নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১২ মে, ২০২২ ১১:৪৮ : পূর্বাহ্ণ
গ্রাহকের ৪ হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনের ১২ বছরের সাজা দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদের ৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার ও সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম ২০১২ সালের ৩১ জুলাই রাজধানীর কলাবাগান থানায় মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দুটি করেন।
২০১৪ সালের ৪ মে দুদকের উপ-পরিচালক মো. মোজাহার আলী সরদার গ্রাহকদের চার হাজার ১১৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে পাচারের অভিযোগে ডেসটিনির ৫১ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।
এর মধ্যে ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির মামলায় ৪৬ জন এবং ডেসটিনি ট্রি প্লানটেশন লিমিটেডে দুর্নীতির মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়।
ডেসটিনি গ্রুপের চেয়ারম্যান সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশিদ ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনসহ ৫১জন এ দুই মামলার আসামি।
আসামিদের মধ্যে রফিকুল আমীন, মোহাম্মদ হোসেন এবং লে. কর্নেল (অব.) মো. দিদারুল আলম ১০ বছর ধরে কারাগারে আছেন।
জামিনে আছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হারুন-অর-রশিদ, চেয়ারম্যান জেসমিন আক্তার, জিয়াউল হক মোল্লা ও সাইফুল ইসলাম রুবেল। বাকি ৪৪ জন আসামি পলাতক।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, ২০০৮ সাল থেকে মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ প্রোজেক্টের নামে ডেসটিনি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল ১ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। সেখান থেকে ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয় বলে দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে। ওই অর্থ আত্মসাতের ফলে সাড়ে ৮ লাখ বিনিয়োগকারী ক্ষতির মুখে পড়েন।
ডেসটিনি ট্রি প্লান্টেশন প্রোজেক্টের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ২ হাজার ২৫৭ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন সাড়ে ১৭ লাখ বিনিয়োগকারী।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের নামে ২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছিল নামসর্বস্ব। আসামিরা প্রথমে প্রোজেক্টের টাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হিসাবে জমা করতেন। তারপর বিভিন্ন ব্যাংকের হিসাবে তা স্থানান্তর করা হতো। দুদক ৩৪টি ব্যাংকে এমন ৭২২টি হিসাবের সন্ধান পায়, যেগুলো পরে জব্দ করা হয়।
২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ৩০৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০২ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে।