নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম প্রকাশের সময় :৪ মে, ২০২২ ১১:০১ : অপরাহ্ণ
বিগত দুই বছর করোনাভাইরাসের কারণে সাধারণ মানুষ, দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারেননি চট্টগ্রামের শীর্ষ বিএনপি নেতারা। সেই ঘাটতি পুষিয়ে দিতে এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরে গরু জবাই করে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন করেন বিএনপির তিন শীর্ষ নেতা।
আজ বুধবার বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী মেহেদীবাগের বাসায়, নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন আসকার দীঘি এলাকায় একটি সেন্টারে এবং নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর লাভলেইন এলাকায় একটি ক্লাবে সাধারণ মানুষ, দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের জন্য মেজবানির আয়োজন করেন।
জানা গেছে, সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত একই সময়ে চলে তিন নেতার এই মেজবানি আয়োজন। বৈরি আবহাওয়া উপেক্ষা করে হাজারো নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ তিন নেতার এই ঈদ মেজবানিতে অংশ নেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর মেহেদীবাগের বাসায় দুটি গরু জবাই করে মেজবানের আয়োজন করা হয়। মেজবানি মাংসের সঙ্গে পোলাও, পরোটা ও জর্দা ভাত দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের আপ্যায়ন করা হয়।
সাবেক এই মন্ত্রী পরম মমতায় নিজ হাতে কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষের পাতে মেজবানি মাংস তুলে দেন।
আমীর খসরুর ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ সেলিম রাজনীতি সংবাদকে জানান, চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকা থেকে তৃণমূল নেতা-কর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষও স্যারের (আমীর খসরু) সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসেন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের সমাগম ছিল। সবাইকে মেজবানি মাংসের সঙ্গে পোলাও, পরোটা ও জর্দা ভাত দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
আমীর খসরু সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের কর্মসূচিতে জনগণের এই স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ-এটিও একটি আন্দোলনের অংশ। এই আন্দোলন ক্ষমতার জন্য নয়, এই আন্দোলন দেশের মুক্তির আন্দোলন, গণতন্ত্রের মুক্তির আন্দোলন, মানুষের মুক্তির আন্দোলন।
তিনি বলেন, আগে যখন পুলিশ লাঠিপেটা করত তখন মানুষ পালিয়ে যেতো। এখন প্রতিবাদ করছে, প্রতিরোধ করছে। এটা তীব্র থেকে তীব্রতর হবে, যতক্ষণ না সরকার পতন হয়।
একই সময়ে নগরীর আসকার দীঘি এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজিত নগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের ঈদ মেজবানিতেও হাজারো কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষ অংশ নেন।
ডা. শাহাদাতের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে করতে নগর বিএনপি বিভিন্ন থানা-ওয়ার্ড থেকে শত শত কর্মী-সমর্থক ছুটে আসেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনও সেখানে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে যান।
ডা. শাহাদাত হোসেনও দুই গরু জবাই করে মেজবানির আয়োজন করেছেন। মেজবানি মাংসের সঙ্গে ছিল মাছ, মুরগী, জর্দা ভাত ও পরোটা।
ডা. শাহাদাত হোসেন কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এ সময় তিনি কর্মী-সমর্থকদের নিজ হাতে আপ্যায়ন করেন। নিজ হাতে কর্মী-সমর্থকদের পাতে ভাত, মেজবানি মাংস, মুরগীর মাংস ও মাছ তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে ডা. শাহাদাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, খালেদা জিয়া যিনি গণতন্ত্রের প্রতীক, সরকার তাকে অন্যায়ভাবে আটক করে রেখে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার রিপোর্টে খালেদা জিয়ারকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাজা দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে আমাদেরকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ডা. শাহাদাত হোসেনের ব্যক্তিগত সহকারী মারুফুল হক চৌধুরী রাজনীতি সংবাদকে জানান, সাড়ে তিন হাজার মানুষের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানে ৫ হাজারের বেশি কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
আমীর খসরু ও ডা. শাহাদাতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করও নগরীর লাভলেইন এলাকায় একটি ক্লাবে মেজবানের আয়োজন করেছেন।
আবুল হাশেম বক্করও দুই গরু জবাই করে মেজবানের মাংস, পরোটা ও জর্দা ভাত দিয়ে নেতা-কর্মীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেন।
তিন হাজারের বেশি কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষ তার এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন বলে জানিয়েছেন নগর বিএনপির দপ্তরের দায়িত্বে থাকা মো. ইদ্রিস আলী।
ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে আসা কর্মী-সমর্থকদের নিজ হাতে আপ্যায়ন করেছেন আবুল হাশেম বক্কর।
আবুল হাশেম বক্কর সাংবাদিকদের বলেন, দুই বছর করোনা মহামারীর কারণে কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে পারিনি। এবার আমরা অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে এখানে এসেছি। কারণ আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গৃহবন্দি অবস্থায় আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তিনি মিথ্যা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে নির্বাসিত অবস্থায় আছেন।