নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধি, চাঁদপুর প্রকাশের সময় :৩০ এপ্রিল, ২০২২ ৩:১৬ : অপরাহ্ণ
রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে সাগর ও নদ-নদীতে ইলিশ মাছ ধরার দুই মাসের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। আজ শনিবার গভীর রাত থেকেই জেলেরা ট্রলার নিয়ে ছুটবেন সাগরে। আবারও জেলে-পাইকার-আড়তদারের হাঁকডাকে মুখর হয়ে উঠবে মৎস্যবন্দরগুলো।
২০০৬ সাল থেকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস চাঁদপুরের বিস্তীর্ণ নদী সীমাকে ইলিশের অভয়াশ্রম ঘোষণা করে জাটকা রক্ষা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। সে অভয়াশ্রমের নির্দিষ্ট সময়সীমা আজ দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হবে।
মৎস্য বিভাগ জানিয়েছে, দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা হওয়ায় এবার কাঙ্ক্ষিত টার্গেট ৬ লাখ টন ইলিশ মাছ আহরণ সম্ভব হবে।
নিষেধাজ্ঞার কারণে জেলেরা নির্বিঘ্নে নদীতে মাছ শিকার করতে পারেননি। তাই অভয়াশ্রম সীমা শেষে মাছ ধরার আনন্দে জেলে পল্লীতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার আনন্দ বাজার, রাজরাজেশ্বর, হরিণা, বহরিয়া ও পুরানবাজারের রণাগোয়াল এলাকার জেলে পাড়াগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, তাদের চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। মাছ ধরার প্রস্তুতি নিয়ে জেলেরা এখন মহাব্যস্ত। এরই মধ্যে নৌকা মেরামত, জাল ঠিক করা, নৌকার দাঁড় তৈরি করা, রাত জেগে নদীতে থাকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন তারা। এমনকি, অনেকে দাদন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধও হয়েছেন। জেলেদের দেখলে মনে হয়, যেন এখন দম ফেলার সময় নেই। দুমাস মাছ ধরতে না পারায় এ পরিবারগুলো যেন হাঁপিয়ে উঠেছিল।
আলাপকালে আনন্দ বাজার এলাকার জেলে হাবিব, খোরশেদ ও লিটন বলেন, ‘অনেক দিন বউ-পোলাপাইনেরে ভালা কিছু খাওয়াইতে পারি নাই। অভাবে অভাবেই কাটছে দিন। তয় এখন যহন মাছ ধরার সুযোগ হইছে, আর টেনশন নাই।’
অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর অভয়াশ্রম কর্মসূচি বেশি সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।
তিনি বলেন, ‘এবার সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেছে। তাই কতিপয় অসাধু জেলে নদীতে নামতে পারেনি। পাশাপাশি নদীতে ড্রেজিং বন্ধ থাকায় ইলিশ অবাধে বিচরণের সুযোগ পেয়েছে। তাই আশা করছি, ইনশাআল্লাহ এ বছর ইলিশ উৎপাদন আরও বাড়বে।’
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, গত বছর দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টনের অধিক। আগামী সময়েও উৎপাদনের এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করেন তিনি।
এদিকে অনেক জেলে অভিযোগ করেছেন, ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময় সরকারের চাল সহায়তার চাল তারা একবারে শেষের দিকে পেয়েছেন।
তাদের অভিযোগ, আমরা এবার একেবারে শেষের দিকে চাল সহায়তা পেয়েছি, আমরা চাই নিষেধাজ্ঞার শুরুতেই যেন এটা দেওয়া হয়।