শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

শিক্ষার্থীদের উপর মেয়াদোত্তীর্ণ টিয়ারশেল, বিষক্রিয়ার আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের


ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশের ছোঁড়া টিয়ারগ্যাস ছিলো মেয়াদোত্তীর্ণ। ছবি: সংগৃহীত

রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৯ এপ্রিল, ২০২২ ৭:২১ : অপরাহ্ণ

কথা কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষ। সোমবার মধ্যরাত থেকে মঙ্গলবার দিনভর ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাজধানীর নিউমার্কেট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ বিপুল টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করেছে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের উপর।

অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের ছোঁড়া টিয়ারশেলগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। রাতে প্রথম দফায় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার ঘটনায় ব্যবহৃত টিয়ারগ্যাস ছিলো মেয়াদোত্তীর্ণ। আবার দুপুরে ছোঁড়া টিয়ারগ্যাসগুলোও মেয়াদোত্তীর্ণ ছিলো।

এমনকি চার বছর আগেই এসব টিয়ারগ্যাসের মেয়াদ শেষ হয়েছে। যা উৎপাদন হয়েছিল ২০১৩ সালে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিহি গুঁড়া কিংবা তরলের অতি ক্ষুদ্রকণার সমষ্টি নিয়ে গঠিত কয়েক ধরনের রাসায়নিক যৌগের একীভূত নামকরণ হলো টিয়ারশেল বা টিয়ারগ্যাস।

তবে এটি কোনো প্রকৃত গ্যাস নয়। গুঁড়ায় ক্ষারজাতীয় রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি থাকায় এর প্রভাবে চোখের শ্লৈষ্মিক ঝিল্লিতে প্রচণ্ড জ্বালা-যন্ত্রণা অনুভূত হয় এবং সংবেদনশীলতার কারণে চোখ থেকে অনবরত পানি ঝরতে থাকে।

এই গ্যাসের কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত সমস্যা হতে পারে। এমনকি কাশি, বিষণ্ণতা এবং শারীরিক দুর্বলতাও দেখা দিতে পারে।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রাসায়নিক হামলার অংশ হিসেবে এই গ্যাসটি প্রথম ব্যবহার করা হয়। তবে স্বল্প সময়ের জন্য কার্যকর হওয়ায় দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ, বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দিতে এটি সারাবিশ্বে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যাপক হারে ব্যবহার করে আসছে।

বিষেজ্ঞরা বলছেন, টিয়ার গ্যাসের কার্যকারিতা সাময়িক, পূর্বে এমন ধারণা করা হলেও নতুন এক গবেষণা বলছে, এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাময়িক নয় বরং এতে আক্রান্ত হওয়ার দুই সপ্তাহ পরেও সমস্যা দেখা গেছে।

আর তা যদি হয় মেয়াদোত্তীর্ণ তাহলে এই ঝুঁকি আরও কয়েকগুন বেশি। এমনকি মেয়াদোত্তীর্ণের কারণে এটির বিষক্রিয়ায় প্রাণনাশের ঝুঁকি থাকে।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী একটি গণমাধ্যমকে বলেন, টিয়ারশেলের ধোঁয়ায় চোখে জ্বালাপোড়া হয়, কিছু সময় পরেই ঠিক হয়ে যায়। এটাই আমাদের ধারণা। কিন্তু এটি যদি মেয়াদোত্তীর্ণ হয়, তবে এর বিষক্রিয়ার ফলে বড় ধরণের শারীরিক ঝুঁকি হতে পারে।

তিনি বলেন, কোনো কিছু উৎপাদন থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ পর্যন্ত যদি সময় দেওয়া তাহলে বুঝতে হবে সেই পণ্যটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর ব্যবহার করলে নিঃসন্দেহে বিষক্রিয়া হবে। টিয়ারশেলও তাই। এর বিষক্রিয়ায় চোখে এলার্জি, ক্ষত এবং শরীরে এলার্জি থেকে শুরু করে বড় ধরণের রোগের ঝুঁকি থাকবে।

মেয়াদোত্তীর্ণ টিয়ারশেল নিক্ষেপের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) একাধিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর