নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৭ এপ্রিল, ২০২২ ৪:১৬ : অপরাহ্ণ
করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এবার ঈদুল ফিতরে অন্যান্য বারের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়াও এক জেলা থেকে অপর জেলায় আরও প্রায় ৫ কোটি মানুষ যাতায়াত করতে পারে।
সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা না গেলে এবারের ঈদযাত্রায় নারকীয় পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে-এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে সংগঠনটি জানিয়েছে, আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের আগের দিন দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে যেতে পারে।
আজ রোববার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘ঈদযাত্রায় অসহনীয় যানজট, পথে পথে যাত্রী হয়রানি, অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য ও সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধের দাবি’ শিরোনামে সংবাদ সম্মেলনে এসব আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, আগামী ২০ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ঈদবাজার, গ্রামের বাড়ি যাতায়াতসহ নানা কারণে দেশের বিভিন্ন শ্রেণির পরিববহনে বাড়তি প্রায় ৬০ কোটি ট্রিপ যাত্রীর যাতায়াত হতে পারে। এজন্য প্রয়োজন বাড়তি নিরাপত্তা, সর্বোচ্চ সতর্কতা, সব পথের প্রতিটি যানবাহনের সর্বোচ্চ ব্যবহার সুনিশ্চিত করা।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য, পরিবহন নেতাদের চাঁদাবাজি এবং বিভিন্ন টোল পয়েন্টের কারণে জাতীয় মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট হয় বলে দাবি করেন তিনি।
ঈদযাত্রায় সড়কে চাঁদাবাজি ও যানজটমুক্ত করার দাবি জানিয়ে মোজাম্মেল হক চৌধুরীর বলেন, এবারের ঈদযাত্রায় রাজধানীবাসী যানজটের কারণে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়বে। তাই এ মুহূর্ত থেকে রাজধানীর সব পথের ফুটপাত ও রাস্তা হকার ও অবৈধ পার্কিং মুক্ত করতে সরকারের সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাই।
রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের প্রবেশদ্বারগুলোতে অসহনীয় যানজট সৃষ্টি হতে পারে এমন আশঙ্কা করে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, এসব যানজট নিয়ন্ত্রণে রাস্তার মোড় পরিষ্কার রাখা ও ছোট যানবাহন বিশেষ করে রিকশা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইক প্রধান সড়কে চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে আগামী ২৫ রমজান থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত দুপুরের পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত রাজধানী অচল হয়ে যাবে।
সড়ক পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করে তিনি বলেন, ট্রেনের টিকিটও কালোবাজারিদের হাতে চলে যেতে পারে। এর ফলে কালোবাজারিদের কাছ থেকে বেশি দামে টিকিট কিনতে হতে পারে যাত্রীদের। এ ছাড়া সম্প্রতি রেল ধর্মঘটের কারণে রেলওয়ে ব্যাপক শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়ায় ব্যাপক ভোগান্তির আশঙ্কা রয়েছে।
বিমানের টিকিট সম্পর্কে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রুটের টিকিট আসন্ন ঈদের আগে ও পরের ১০ দিনের বাংলাদেশ বিমানসহ বেসরকারি এয়ারলাইনসগুলোর টিকিট বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিগুলো দখল করে নিয়েছে। এর ফলে এবারের ঈদে যাত্রী সাধারণকে এসব ফ্লাইটে টিকিট কয়েকগুণ বাড়তি দামে কিনতে হবে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেন বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণাকেন্দ্রের পরিচালক মো. হাদিউজ্জামান। তিনি মনে করেন, এবার চাহিদা বেশি হওয়ায় সড়কের ব্যবস্থাপনা কোমায় চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হাদিউজ্জামান বলেন, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ২০ রমজানের পর বন্ধ হয়ে যাবে। পরিবারের সদস্যরা, যাদের কাজ নেই, তাদেরকে ২০ রমজান থেকে বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। যারা কর্মজীবী, ছুটি পেলে তারা পরে যাবেন। তাহলে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।