রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১১ এপ্রিল, ২০২২ ৬:২২ : অপরাহ্ণ
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাকিস্তানের নয়া প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলেন মিয়া মহম্মদ শাহবাজ শরিফ।
আজ সোমবার পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদ তাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছে। শাহবাজের পক্ষে পড়েছে ১৭৪টি ভোট।
নিজের দল মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন)-এর পাশাপাশি পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি), মুত্তাহিদা মজলিস-ই-আমল-সহ বেশ কয়েকটি দলের সমর্থন পেয়েছেন শাহবাজ।
তবে জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী পদে ভোটাভুটি শুরু হওয়ার আগে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ১১৫টি সদস্য পদ নিয়ে ওয়াকআউট। এরপর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন শাহবাজ।
জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী পদে এই ভোটাভুটিতে শাহবাজ শরিফের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন পিটিআইয়ের সহ-সভাপতি ও সদ্য বিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কোরেশি। সোমবার তার নেতৃত্বে পিটিআইয়ের সব এমপি অধিবেশন বর্জন করলে প্রতিদ্বন্দ্বীহীন হয়ে যান শাহবাজ।
এর আগে অনাস্থা ভোটে ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রিত্ব যাওয়ার পর জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হন বিরোধী দলের শাহবাজ এবং পিটিআইয়ের মাহমুদ কুরেশি।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনে পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু হলে মাহমুদ কুরেশি ঘোষণা দেন, পিটিআইয়ের সব এমপি পার্লামেন্ট থেকে গণপদত্যাগ করবেন। এরপর পিটিআইয়ের এমপিরা পার্লামেন্ট থেকে ওয়াক আউট করেন।
দেশের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন এই বিরোধী জোট নেতা শাহবাজ শরিফই।
তিনি শুধু পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, তার আরও একটি পরিচয় হল, তিনি দেশটির তিনাবের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের ভাই।
দেশের বাইরে শাহবাজ ততটা পরিচিত না হলেও দেশের ভেতরে প্রশাসনিক দক্ষতার জন্য তার সুনাম আছে।
তিনবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর পদে ছিলেন শাহবাজ শরিফ। এ পদে সবচেয়ে বেশি দিন থাকার কৃতিত্বও তারই আছে।
শনিবার মধ্যরাতে পাকিস্তানের পার্লামেন্টের জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান।
অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে অর্থাৎ ইমরানের বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ১৭৪টি। ৩৪২ আসনের জাতীয় পরিষদে প্রস্তাবটি পাসের জন্য দরকার ছিল ১৭২টি ভোট।
দেশের আর্থিক দুরবস্থা ও ভুল পররাষ্ট্রনীতির অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনে বিরোধী দলগুলো। এ অনাস্থা প্রস্তাবকে ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়ে ৩ এপ্রিল খারিজ করে দেন জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি। ওই দিনই প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এতে চরম রাজনৈতিক সংকটে পড়ে পাকিস্তান।
এ পরিস্থিতিতে স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ দেন সুপ্রিম কোর্ট। বিরোধীরাও আদালতের শরণাপন্ন হন। টানা পাঁচদিনের শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ ও জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন সর্বোচ্চ আদালত। একইসঙ্গে শনিবার অনাস্থা প্রস্তাবের সুরাহার নির্দেশ দেন প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ।