রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১১ এপ্রিল, ২০২২ ১২:১৮ : অপরাহ্ণ
অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানো ইমরান খানের সমর্থনে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ করেছেন।
গতকাল রোববার রাতে করাচি, পেশোয়ার, মালাকান্দ, মুলতান, খানেওয়াল, খাইবার, ঝাং, কোয়েটা, ওকারা, ইসলামাবাদ, লাহোর ও অ্যাবোটাবাদ শহরে বিক্ষোভ হয়। বাজাউর ও লোয়ার দিরেও বিক্ষোভ হয়েছে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে।
বিক্ষোভের একটি ভিডিও টুইটারে শেয়ার করে ইমরান খান লিখেছেন, ‘দুর্বৃত্তদের নেতৃত্বে আমদানি করা সরকার প্রত্যাখ্যান করে আমাদের ইতিহাসে আগে কখনোই এভাবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতসংখ্যক বিক্ষোভকারী রাজপথে নেমে আসেননি।’
বিক্ষোভের পর ইমরান তার সমর্থকদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এরকম অত্যাশ্চর্য সমর্থন দেখানোর জন্য তিনি সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন। স্থানীয় মীরজাফররা বিশ্বাসঘাতকতা করে ক্ষমতায় এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসছে। দেখা যাচ্ছে, দেশে ও বিদেশে বসবাসকারী পাকিস্তানিরা এই চক্রান্তের বিরোধিতা করছেন।
ইমরান খান দাবি করেছেন, দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয়েছে। বিদেশি শক্তি চক্রান্ত করে তার সরকার ফেলে দিয়েছে। মানুষ নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষা করতে পথে নামবে।
আগের দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পিটিআইয়ের মুখপাত্র ফাওয়াদ চৌধুরী এদিন এশার নামাজের পর জনগণকে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আহ্বান জানান। পরে দলীয়ভাবে রাত সাড়ে নয়টায় বিক্ষোভ শুরু করার সময়সূচি জানিয়ে দেওয়া হয়।
ইসলামাবাদে জিরো পয়েন্টে ইমরানের সমর্থকরা সমবেত হন। শুরু হয় বিক্ষোভ। এর ফলে বিশাল যানজট হয়। রাওয়ালপিন্ডিতে বহু মানুষ সমবেত হয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। সেখানে নেতারা ভাষণ দেন। তাদের নিশানায় ছিলেন মূলত শাহবাজ শরিফ।
পেশোয়ারে প্রেস ক্লাবের সামনে প্রচুর বিক্ষোভকারী জমায়েত হন। সেখানে প্রচুর নারী এসেছিলেন। লাহোর, করাচিসহ বিভিন্ন শহরে এবং বিদেশেও ইমরানের দলের কর্মী ও সমর্থকরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।
ইমরান খানের দল সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রথম থেকেই তারা নতুন সরকারের সঙ্গে সংঘাতে যাবে। পথে নেমে যেমন আন্দোলন করা হবে, তেমনই ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতেও কড়া প্রতিবাদের পথে যাবে তারা।
নানা নাটকীয়তার পর গত শনিবার রাতে জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারান ইমরান খান। এ অনাস্থা ভোটের পেছনে একটি বিদেশি রাষ্ট্রের (যুক্তরাষ্ট্র) ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করে আসছেন তিনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা তার এ দাবিকে ‘অতিরঞ্জিত’ মনে করছেন।
সেনা হস্তক্ষেপের দীর্ঘ ইতিহাস থাকা পাকিস্তানে কোনো প্রধানমন্ত্রীই তাদের মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেননি। তবে ইমরান খানই প্রথম প্রধানমন্ত্রী, যিনি পার্লামেন্টে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে হেরে বিদায় নিয়েছেন।