রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৯ এপ্রিল, ২০২২ ২:১৩ : অপরাহ্ণ
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে দেশটির পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনার অধিবেশন নিয়ে নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়েছে।
আজ শনিবার জাতীয় পরিষদে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোট হওয়ার কথা। এই ভোটের উপর নির্ভর করছে ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কিনা।
কিন্তু সকাল সাড়ে ১০টায় অধিবেশন শুরুর কিছুক্ষণ পরে স্থানীয় সময় দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে গেলেও এখন অধিবেশন শুরু হয়নি।
তবে ভাগ্যনির্ধারণী এই অধিবেশনে মুলতবির আগ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন না প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
জিয়ো নিউজের খবরে বলা হয়, আদালতের রায়ের কারণে শনিবার জাতীয় পরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার আসাদ কায়সার।
অধিবেশন শুরুর পর পিটিআইয়ের ১৫১ সংসদ বিরোধী দলের নেতা শেহবাজের বক্তব্যে ব্যাঘাত ঘটাতে স্লোগান দিতে থাকেন।
এ সময় শেহবাজ স্পিকারকে সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী অধিবেশন পরিচালনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, বিরোধীরা আজ ‘সিলেক্টেড’ প্রধানমন্ত্রীকে আইন ও সাংবিধানিক পন্থায় উৎখাত করবে।
এর পর স্পিকার বলেন, পিটিআই সরকারের বিরুদ্ধে ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’ নিয়ে হাউসে অবশ্যই একটি আলোচনা হওয়া উচিত।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পিএমএল-এন প্রেসিডেন্ট দাঁড়িয়ে স্পিকার কায়সারকে মনে করিয়ে দেন যে, তিনি ‘সুপ্রিম কোর্টের আদেশ পালনে বাধ্য’।
সুপ্রিম কোর্টের আদেশ সত্ত্বেও পাকিস্তানের তথ্য ও আইনমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, আজকের বদলে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবের ভোট আগামী সপ্তাহে হতে পারে।
যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই অধিবেশন মুলতবি করা হয়। কিন্তু সাড়ে ১২ টা পেরিয়ে গেলেও স্পিকার অধিবেশন শুরু করেননি।
খবরে বলা হয়, এরপর জোট প্রধান শাহবাজ শরীফের চেম্বারে জরুরি বৈঠকে বসেন বিরোধী নেতারা। অধিবেশন শুরু না হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আবারও আদালতে যেতে পারেন তারা। বিষয়টিকে আইনের প্রতি অসম্মান জানিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বিরোধী নেতারা।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়টি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির আজকের কর্মসূচির চার নম্বরে রয়েছে। অধিকাংশ আইনপ্রণেতাই উপস্থিত রয়েছেন পার্লামেন্টে।
৭ এপ্রিল ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাব বাতিল ও পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে পার্লামেন্ট পুনর্বহালেরও নির্দেশ দেন বিচারপতিদের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ।
গত রোববার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা বিরোধী জোটের তরফে পেশ হওয়া অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ভোটাভুটির কথা থাকলেও ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি তা খারিজ করে দেন।
তিনি জানান, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানবিরোধী এবং তা দেশের কল্যাণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই পাকিস্তানের সংবিধানের ৫ নম্বর ধারা মেনে এ নিয়ে কোনো ভোট করাতে পারবেন না তিনি।
এর পরেই ইমরান খানের সুপারিশে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সেদিন রাতেই শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করেন বিরোধীরা।