বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
গেলো বুধবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাদের কাছে অনুরোধ করেছেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে হবে। কিন্তু ওবায়দুল কাদের সব সময় বক্তব্য দেন, বিএনপি নাকি বিদেশিদের কাছে ধরনা দেয়। আজ প্রমাণিত হয়েছে, বিদেশিদের কাছে যারা ধরনা দেয়, তারা হচ্ছে আওয়ামী লীগ।’
আরও পড়ুন: আমেরিকার কাছে ধরনা দেওয়ার দরকার নেই, আ.লীগকে ফখরুল
বিএনপি মহাসচিবের এই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারের কারও কাছে ধরনা দেয়ার প্রয়োজন হয় না। আওয়ামী লীগ জানে, রাজনীতি করতে হলে জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন প্রয়োজন। কিন্তু ক্ষমতালিপ্সু বিএনপি বরাবরই হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে মানুষের কল্যাণের জন্য কিছু করেনি। বিএনপির এ অপরাজনীতির কারণে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
বিএনপির যেকোনও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দিতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত রয়েছে জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যেকোনও উপায়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক চেতনাকে সমুন্নত রাখতে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং যেকোনো ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে কাউকে আনা না আনা সরকারের দায়িত্ব না। আইন অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের ওপর ন্যস্ত। তবে আমরা প্রত্যাশা করি, গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী সব রাজনীতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। বিএনপি ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করে জনকল্যাণের রাজনীতিতে নিজেদের নিয়োজিত করবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে-জনগণই সব ক্ষমতার উৎস। আর এদেশের মানুষের হৃদয়ের আবেগ ও অবিভাজিত বোধের এক অপরাজেয় শক্তির নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, যা ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, গণতন্ত্র সবার সম্মিলিত প্রয়াসের ফল। কিন্তু গণতন্ত্রকে নসাৎ করে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী অপরাজনীতি শুরু করে। মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে জাতীয় ঐক্যের বিপরীতে বিভেদের অপরাজনীতির প্রচলন করে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই- বিদেশে আওয়ামী লীগ বা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কোনও প্রভু নেই। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়- বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত এ পথেই আওয়ামী লীগ সরকার পররাষ্ট্র নীতি পরিচালনা করে। যেখানে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থই মূল বিবেচ্য বিষয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের মানুষের কল্যাণ কিংবা দেশের স্বার্থ রক্ষায় আপোষহীন মনোভাব পোষণ করায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপির রাজনীতিতে বিদেশ নির্ভরতা দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে। তাদের নেতা দেশ থেকে টাকা পাচার করে বিদেশে পালিয়ে থেকে আয়েশী জীবন যাপন করছে।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, কোনও কোনও দেশের সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকায় তাদের দূতাবাস খোলার আগেই বিএনপি নেতারা ফুল ও মিষ্টি নিয়ে হাজির হয়। বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতাদের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করে ফায়দা লুটার অপচেষ্টাও করেছে বিএনপি। দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিয়ে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করে দেশি-বিদেশি চক্রের যোগসাজশে যেকোনও উপায়ে তারা ক্ষমতা দখল করতে চায়।