শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার আসামি আশিষ গ্রেপ্তার


আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৫ এপ্রিল, ২০২২ ১১:১৭ : অপরাহ্ণ

দীর্ঘ ২৪ বছর পূর্বের চাঞ্চল্যকর জনপ্রিয় চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার পলাতক এক নম্বর আসামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার আনুমানিক রাত পৌনে ১১টার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।

এর আগে আনুমানিক রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তার বাসাটি ঘিরে রাখে র‌্যাব সদস্যরা।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল। সেই তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বাসাটিতে অভিযান চালানো হয়। পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যার আসামি আশিষ গ্রেপ্তার

র‌্যাব সূত্রে জানা গেছে, আশিষ রায় চৌধুরীকে বিভিন্ন ধরনের মাদকসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ভালোবেসে বিয়ে করেন ওই সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতিকে। বিয়ের কিছু দিন পর তাদের সম্পর্কে ফাটল ধরে। ওই সময় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন সোহেল চৌধুরী। জড়িয়ে পড়েন নেশার জগতে। সেই অন্ধকার জগতের অপরাধীদের সঙ্গে শুরু হয় বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে দ্বন্দ্ব। সেই দ্বন্দ্বের রেশ ধরেই খুন হন সোহেল চৌধুরী।

বনানীর ১৭ নম্বর রোডের আবেদীন টাওয়ারে ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীদের গুলিতে মারা যান নায়ক সোহেল চৌধুরী। ওই ঘটনায় নিহতের ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গুলশান থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত শেষে ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবুল কাশেম ব্যাপারী ৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলে-আদনান সিদ্দিকী, ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজ, তারেক সাঈদ মামুন, সেলিম খান, হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন, ফারুক আব্বাসী, শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালের ৩০ অক্টোবর ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন। এর দুই বছর পর মামলাটির বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ঢাকার দুই নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।

ওই বছরই আসামিদের মধ্যে একজন হাইকোর্টে আবেদন আবেদন করেন। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সাল থেকে দীর্ঘ ১৯ বছর হাইকোর্টের আদেশে মামলাটি স্থগিত ছিল।

গত ২০ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক জাকির হোসেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলায় ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই ওরফে আব্দুল আজিজসহ তিনজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য দুই আসামি হলেন-ট্রাম্পস ক্লাবের মালিক আফাকুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলাম ও সেলিম খান। জামিনে থাকা এই তিন আসামির পক্ষে তাদের আইনজীবীরা কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

গত রোববার এই মামলায় সাক্ষ্য শুরুর দিন ধার্য ছিল। মামলার বাদী সোহেল চৌধুরীর ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী আদালতে হাজির হননি। তাই তার বিরুদ্ধেও অজামিনযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। একইসঙ্গে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৪ মার্চ দিন ধার্য করেন।

আসামিদের মধ্যে তারিক সাঈদ মামুনকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। অপর দুই আসামি হারুন অর রশীদ ওরফে লেদার লিটন ওরফে বস লিটন কারাগারে থাকলেও তাকে হাজির করা হয়নি।

এছাড়া জামিনে থাকা দুই আসামি আদনান সিদ্দিকী ও ফারুক আব্বাসী আদালতে হাজির ছিলেন। বাকি দুই আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ও আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক।

মামলাটি উচ্চ আদালতের আদেশে দীর্ঘদিন বিচার কাজ স্থগিত ছিল। ২০১৫ সালে এই মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার হয়। প্রত্যাহারের সেই আদেশসহ মামলার নথি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আসে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর