নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৩ মার্চ, ২০২২ ১০:৩৭ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের সিনেমার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি জানি সুযোগটা খুব সীমিত। তার মধ্য দিয়ে প্রোডাকশানগুলো এত সুন্দর হয়, আমি সত্যি মুগ্ধ হয়ে যাই।
আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় চলচ্চিত্র প্রদান অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও আমি হলে যেয়ে সিনেমা দেখতে পারি না। মাঝে মাঝে প্লেনে যখন যাই, তখন সব সময় আমি আমাদের দেশের সিনেমাগুলো দেখি। অনেকে সিনেমা করে আমাকে দয়া করে পেনড্রাইভে পাঠান, সেটাও আমি দেখি। আমার ভালোই লাগে আমার দেশের সিনেমাগুলো দেখতে।
শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প-সাহিত্যের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের জন্য আমাদের বাসা সব সময় উন্মুক্ত ছিল। ধানমন্ডি লেক কাটা হয়েছে, আমরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসায়। তখনো বাড়িটা সম্পূর্ণ হয়নি। কিন্তু লেকের পাড়ে অনেক সময় অনেক শুটিং হতো। সেখানে অনেক শিল্পীরাই আসতো এবং তাদের বসার জায়গাটা ছিল আমাদের বাড়ি। আমার মা নিজের হাতে তাদের চা-নাস্তা খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন এবং উৎসাহ দিতেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিনেমা শিল্প একটা সময় খুবই বাধাগ্রস্ত হয়েছে। তা ছাড়া, করোনার সময় খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেহেতু করোনা আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি, আমি চাই এই শিল্পটা আরও গড়ে উঠুক। শিল্পী, কলা-কুশলী সবাই যাতে সুযোগ পায় সে জন্য ট্রাস্ট ফান্ড তৈরি করে দিয়েছি। আমরা সিড মানির ব্যবস্থাও করেছি তবে আমি মনে করি, আমাদের অনেক বিত্তবানরা আছেন, শিল্পের সঙ্গেও জড়িত আছেন, কেউ কেউ পুরস্কারও পেলেন; আমি চাই যারা বিত্তবান তারা বেশি করে এই ফান্ডে টাকা রাখেন। আমাদের বহু চিত্রশিল্পীরা যখন বয়োঃবৃদ্ধ হয়ে যান, অসুস্থ হয়ে পড়েন সকলের করুণ অবস্থা হয়। আমি সরকারে থাকি আর বিরোধী দলে থাকি সব সময় যেহেতু খোঁজ-খবর রাখতাম আমি সাধ্য মতো চেষ্টা করেছি সহযোগিতা দিতে। এই ট্রাস্ট ফান্ড এই জন্য করেছি, তাদের বিপদ-আপদে এই ট্রাস্ট ফান্ড থেকে চিকিৎসার জন্য সহযোগিতা পেতে পারেন।
শেখ হাসিনা বলেন, যদিও এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগ, আমাদের সিনেমা শিল্পটা আসলে সেই এনালগ সিস্টেমেই অনেকটা থেকে গিয়েছিল এবং থেকে যাচ্ছে। সেটাকে আমি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন করতে চাই। মানুষের বিনোদনের সুযোগ সিনেমা। তারা দেখতে চান। যারা মালিক তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাদের সহযোগিতার অফার দিয়েছিলাম। আসলে মাঝখানে একটু ভাটা পড়ে যাওয়াতে অনেকে সেই উদ্যোগে ছিল না। এখন আমরা ১ হাজার কোটি টাকার আলাদা ফান্ড তৈরি করে রেখেছি। আমি চাই, আমাদের জেলা-উপজেলা সব জায়গাতে সিনেপ্লেক্স নির্মাণ হোক। যেখানে আধুনিক প্রযুক্তিতে যেন চলচ্চিত্র দেখানো যায়।
নির্মাতাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিনোদনের সঙ্গে সঙ্গে সমাজ সংস্কার, মানুষকে শিক্ষা দেওয়া, মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করা এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া—চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সবাইকে আহ্বান জানাবো, আমাদের স্বাধীনতা অর্জন, আমাদের গণমানুষের যে আত্মত্যাগ এবং আমাদের এগিয়ে চলার পথ যেন মানুষের কাছে আরও ভালোভাবে উপস্থাপন হয়। মানুষ যেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে পারে এবং আমাদের নতুন প্রজন্ম যেন নিজেদের জীবন আরও সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে পারে। সেভাবেই শিল্পগুলো তৈরি করে আপনারা মানুষের সামনে উপস্থাপন করবেন।