শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা দেশজুড়ে

‘খুঁজে না পাওয়া’ আসামিকে নিয়ে থানায় জন্মদিন পালন করা ওসি প্রত্যাহার


ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি

প্রতিনিধি, চকরিয়া প্রকাশের সময় :১৭ মার্চ, ২০২২ ৫:০৩ : অপরাহ্ণ

একটি হত্যাচেষ্টা মামলার আসামিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না বলে দাবি করেছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি। পরে তাদের পলাতক দেখান।

পরে সেই পলাতক আসামির সঙ্গে থানায় নিজের জন্মদিনে কেক কাটেন ওসি ওসমান গণি। করেন ফটোসেশনও।

সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অপরাধে তাকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার কক্সবাজার পুলিশ সুপার মো. হাসানুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

অফিস আদেশের সত্যতা নিশ্চিত করে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, থানার মধ্যে পলাতক আসামিদের সঙ্গে ওসির জন্মদিন পালন, আসামিদের কেক খাইয়ে দেওয়া ও আসামিদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি কয়েকটি গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সে কারণে তাকে প্রত্যাহার করে কক্সবাজার পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এর আগে ২ মার্চ বিকেলে হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামি আরহান মাহমুদ রুবেল কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণিকে জন্মদিনের কেক খাইয়ে দেয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

‘খুঁজে না পাওয়া’ আসামিকে নিয়ে থানায় জন্মদিন পালন করা ওসি প্রত্যাহার
কক্সবাজারের চকরিয়া থানায় হত্যাচেষ্টা মামলার পলাতক আসামি আরহান মাহমুদ রুবেলকে জন্মদিনের কেক খাইয়ে দিচ্ছেন ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি। ছবি: সংগৃহীত

সেখানে দেখা গেছে, আকাশি রঙের সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত ওসি ওসমান গণি মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছেন। তার বাঁয়ে কালো কোটপরা আরহান, আলিফসহ কয়েকজন ওসির মুখে জন্মদিনের কেক তুলে দিচ্ছেন। ওসিও আরহানকে কেক খাইয়ে দেন। এরপর আরহানের সঙ্গে যাওয়া তরুণদের নিয়ে ওসি ফটোসেশন করেন।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত ২০১৯ সালের ২৯ এপ্রিল রাতে চকরিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাবেক সাধারণ সম্পাদক আরহান মাহমুদ রুবেলের (২৪) নেতৃত্বে ২০-২২ জনের একটি দল কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তারেকুল ইসলাম রাহিতকে কুপিয়ে জখম করে বলে অভিযোগ ওঠে।

সে সময় তারেকুলের মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করে তারা। এ ঘটনায় তারেকুলের ছোট ভাই তানজীমুল ইসলাম বাদী হয়ে রুবেলকে প্রধান আসামি করে চকরিয়া থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।

মামলার ৬ নম্বর আসামি করা হয় মোহাম্মদ আলিফকে। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এজাহারে উল্লেখ করা ১০ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত ১০ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু এরপর থেকে আসামি আরহান মাহমুদ রুবেল ও মোহাম্মদ আলিফকে দীর্ঘদিন ধরে খুঁজে না পাওয়ার দাবি করছিল চকরিয়া থানার ওসি ওসমান গনি।

অথচ গত ২ মার্চ তাকে নিয়ে থানায় বসে জন্মদিনের কেক কাটেন। এতে আরও কিছু তরুণ কেক কাটার উৎসবে অংশ নেন। রুবেলের সঙ্গে থাকা ১৪ জন যুবকও ওসির সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।

জানতে চাইলে ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণি গণমাধ্যমকে বলেন, ভুল হয়ে গেছে। ভবিষ্যতে সুন্দরভাবে কাজ করার জন্য সবার সহযোগিতা চাই।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর