রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১০ মার্চ, ২০২২ ৭:৩৪ : পূর্বাহ্ণ
চ্যাম্পিয়নস লিগে রিয়াল মাদ্রিদ বনাম পিএসজির ম্যাচটাকে দুই ভাগে করা যায়।
প্রথম ভাগে কিলিয়ান এমবাপ্পে যদি নায়ক হয়, দ্বিতীয় ভাগে করিম বেনজেমা হয়েছেন মহানায়ক।
ছন্দে থাকা ফরাসি স্ট্রাইকার করিম বেনজেমা মাত্র ১৭ মিনিটের মধ্যে পেলেন দুরন্ত হ্যাটট্রিকের স্বাদ।
বুধবার রাতে ঘরের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শেষ ষোলোর জমজমাট ফিরতি লেগে মেসি-নেইমার-এমবাপ্পের পিএসজিকে ৩-১ গোলে (দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২) জিতেছে রিয়াল।
দুই দলের আগের দেখায় নিজেদের মাঠে ১-০ গোলে জিতেছিল পিএসজি।
ফলে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পেয়েছে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা।
আগের ম্যাচে নেইমার বেঞ্চ থেকে শুরু করলেও এদিন শুরুর একাদশেই ছিলেন ব্রাজিলিয়ান তারকা।
খেলার প্রথম মিনিট থেকেই আক্রমণে যাওয়ার চেষ্টা করে রিয়াল। স্বাগতিকদের লক্ষ্য ছিল প্রেসিং করে পিএসজিকে চাপে ফেলা।
অবশ্য পাল্টা আক্রমণ শুরু করে পিএসজিও। যে কারণে ম্যাচের শুরু থেকে ছিল উত্তাপ। সে সঙ্গে দেখা মিলছিল নান্দনিকতারও।
তবে দ্রুতই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় পিএসজি। ১৩ মিনিটে মিলিতাওয়ের ভুলে পাওয়া দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপ্পে।
তার শট ঠেকিয়ে দেন থিবো কোর্তোয়া। এরপর আরেকটি আক্রমণে নেইমারের শটও আটকান কোর্তোয়া।
বিপরীতে চেষ্টা করে রিয়ালও। কিন্তু তারাও পাচ্ছিল না গোলের দেখা। রিয়াল না পারলেও ঠিকই বল জালে জড়ায় পিএসজি। যদিও সেই গোল বাতিল হয় অফসাইডের কারণে।
এরপর দ্রুত একাধিক সুযোগ তৈরি করে রিয়াল। তবে তাতেও আসেনি গোল। ৩৯ মিনিটে অবশ্য আর ভুল হয়নি এমবাপ্পের। নেইমারের পাস থেকে বল পেয়ে দুর্দান্ত ফিনিশংয়ে লক্ষ্যভেদ করেন এমবাপ্পে।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে রিয়াল ডিফেন্সে চাপ বাড়ালেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি পিএসজি।
বিরতির পর খেলা শুরুর নবম মিনিটে ফের গোল করেছিলেন এমবাপে। কিন্তু মেসির পাস নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার আগে তিনি নিজেই ছিলেন অফসাইডে।
সমানতালে চলতে থাকা আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণের চিত্র পাল্টে যায় কিছুক্ষণ পরই। হাইভোল্টেজ লড়াইয়ে একক প্রাধান্য বিস্তার করে রিয়াল।
৬১তম মিনিটে পিএসজি গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মার মারাত্মক ভুলে সমতায় ফেরে রিয়াল। ইতালিয়ান এই গোলরক্ষক ঠিকঠাক বল ধরে পাস দিতে না পারায় সেই বল পান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তার পাস থেকে সহজে গোল করেন বেনজেমা।
ম্যাচে সমতা ফেরার পর আক্রমণ পালটা আক্রমণে জমে ওঠে ম্যাচ। দুই দলই এ সময় গোলের সুযোগ তৈরি করে।
তবে দুই মিনিটের মধ্যে পরপর দুই গোলে হ্যাটট্রিক করে বার্নাব্যুকে ফের উচ্ছ্বাসে ভাসান বেনজেমা।
৭৬তম মিনিটে প্রতিপক্ষের কয়েকজন খেলোয়াড়কে এড়িয়ে নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে আক্রমণে ওঠেন মদ্রিচ। তার পাস পেয়ে সুবিধা করতে না পেরে এই ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডারকেই বল ফেরত দেন ভিনিসিয়ুস।
মদ্রিচ এরপর নিখুঁতভাবে খুঁজে নেন বেনজেমাকে। বাকি কাজটা সারেন তিনি। শট ঠেকাতে যাওয়া পিএসজি অধিনায়ক মার্কুইনোসের পায়ে লেগে একটু ওপরে উঠে বল দোন্নারুমার আয়ত্বের বাইরে চলে যায়।
পরের মিনিটেই হ্যাটট্রিক পূরণ করে ফেলেন অভিজ্ঞ রিয়াল দলনেতা বেনজেমা। ডি-বক্সে ঢুকে পড়া ভিনিসিয়ুসের পা থেকে বল কেড়ে বিপদমুক্ত করতে চেয়েছিলেন মার্কুইনোস।
কিন্তু তার দুর্ভাগ্য বেনজেমার জন্য পরিণত হয় সৌভাগ্যে। বল পেয়ে নিচু শটে জাল কাঁপান তিনি। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে রিয়াল এগিয়ে যায় ৩-২ ব্যবধানে।
যোগ করা সময়ের শেষদিকে মেসির সামনে সুযোগ এসেছিল দলকে ম্যাচে ফেরানোর। কিন্তু রেকর্ড সাতবারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এই তারকা পারেননি রোমাঞ্চ ছড়াতে।
তার ফ্রি-কিক চলে যায় ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে। ফলে তারকাখচিত দল বানিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বপ্ন এবারও অধরা থেকে গেলো পিএসজির।