শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

সংকটময় মুহূর্তে কিছু ব্যবসায়ী দু’পয়সা বেশি কামাই করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৭ মার্চ, ২০২২ ৪:৫৮ : অপরাহ্ণ

দেশের বাজারে দ্রব্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে আগে থেকেই বিশ্বে পণ্যদ্রব্যের দাম কিছুটা বাড়তি ছিল। কিন্তু নতুন করে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সংকটের কারণে এ দাম আরও বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ঘাটতি দেখা দিলে তার প্রভাব সবখানেই পড়ে।’

পণ্যদ্রব্যের দাম নিয়ন্ত্রণে মনিটরিং টিম রয়েছে জানিয়েছে সরকারপ্রধান বলেন, ‘সংকটময় মুহূর্তে কিছু ব্যবসায়ী দু’পয়সা বেশি কামাই করতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

আজ সোমবার ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ৭ মার্চের ভাষণ বাজানো নিষিদ্ধ ছিল। আমাদের ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী, আমাদের আওয়ামী লীগের অনেক নেতা-কর্মীকে ৭ মার্চের ভাষণ বাজাতে গিয়ে নির্যাতিত হতে হয়েছে। তাদের গুলি খেয়ে মরতে হয়েছে। তাদের ওপর চরম অত্যাচার চলেছে। ২১ বছর বাঙালি জাতি স্বাধীনতার বিকৃত ইতিহাস শুনেছে। আর একুশটা বছর ধরেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, লাখো শহীদের রক্তদান, আমাদের সংগ্রাম— সবকিছু ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ এটি প্রমাণিত সত্য যে, সত্য কেউ কখনো মুছে ফেলতে পারে না। আর ৭ মার্চের ভাষণেই তো জাতির পিতা বলে গেছেন- কেউ দাবায়া রাখতে পারবা না। বাঙালিকে কেউ দাবায় রাখতে পারে নাই।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যখন ভাষণ দিতে যাবেন তখন অনেক রাজনৈতিক দল, অনেক ছাত্রনেতা পরামর্শ দিতে থাকেন যে কি করা উচিত। কয়েকটা ছাত্রনেতা তো বলেছিলেন যে আজ সরাসরি তো স্বাধীনতার ঘোষণা দিতেই হবে। না হলে তো মানুষ হতাশ হয়ে যাবে-এমনটাও বলেছিল। আমাদের কিছু কিছু বুদ্ধিজীবী অনেকে অনেক পয়েন্ট লিখে লিখে দিয়ে গেছেন। অনেকেই পরামর্শ দিয়ে গেছেন। আমাদের বাসাটা তখন উন্মুক্ত ছিল। সবার জন্য খোলা ছিল।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আব্বাকে আমার মা একটা কথাই বলেছিলেন, সারাটা জীবন তুমি সংগ্রাম করেছ এ দেশের মানুষের জন্য। তুমি জানো এ দেশের মানুষের জন্য কোনটা ভালো। তোমার মনে যেটা আসবে তুমি ঠিক সেটাই বলবা। তোমার কারও কথা শোনার প্রয়োজন নাই। আজ আপনারা যে ভাষণটা দেখেন তার (বঙ্গবন্ধুর) কাছে কিন্তু কোনো কাগজ নাই, কিছু নাই। তিনি একাধারে বঞ্চনার ইতিহাস পড়ে যাচ্ছেন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি মাত্র ভাষণ যা কেউ কোনোদিন বের করতে পারবে না, যে এই ভাষণটা কত ঘণ্টা, কত মিনিট, কত দিন বাজানো হয়েছে। এর হিসাব করা একটি কঠিন ব্যাপার। যুগ যুগ ধরে আমরা শুনছি এবং বাজানো হচ্ছে। কত কোটি কোটি মানুষ শুনেছে। যতই বাধা দেওয়া হয়েছে ততই যেন এই ভাষণটা আরও উদ্ভাসিত হয়েছে।’

এখনো এই ভাষণ আমাদের অনুপ্রেরণা দেয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘এ ভাষণের প্রতিটি লাইন একেকটার কবিতার অংশ। ভাষণের যে ঐতিহাসিক কথা-এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে এই লাইনটা বাজানো হতো।’

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা ভাষণ শেষ করেছেন ‘‘জয় বাংলা’’ স্লোগান দিয়ে। বাঙালির জয়, বাংলার জয়, বাংলার মানুষের জয়, এই জয় বাংলা স্লোগান। আমার আত্মবিশ্বাস আর কোনোদিন কেউ এই ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে না। একটি ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে এবং স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনে।’

অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর