শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আন্তর্জাতিক

ইউক্রেনের ২ অঞ্চলকে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি, সেনা পাঠালো রাশিয়া



রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১১:১৭ : পূর্বাহ্ণ

রুশপন্থী বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের বিচ্ছিন্ন দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে রাশিয়া।

স্বাধীন ঘোষিত এই দুই অঞ্চলে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া।

এমন হঠকারী নির্দেশের ফলে শীঘ্রই বড় কোনো যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পশ্চিমা দেশগুলো।

স্থানীয় সময় সোমবার রাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দিয়েছে মস্কো।

এ সময় ইউক্রেনকে রাশিয়ার ইতিহাসের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে বর্ণনা করে পুতিন বলেন, ‘পূর্ব ইউক্রেন এক সময় রাশিয়ার ভূমি ছিল। ইউক্রেন কোনো দিনই স্বাধীন রাষ্ট্র ছিলো না এবং আধুনিক ইউক্রেন সৃষ্টি হয়েছে রাশিয়ার মাধ্যমে। ইউক্রেনকে ন্যাটোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি সরাসরি রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য হুমকি। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, রাশিয়ার জনগণ তার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাবে।’

দীর্ঘ এক বক্তব্যে পুতিন ইউক্রেনের সম্পর্কে বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্রের কলোনি, যা চলছে ‘পুতুল সরকারের’ মাধ্যমে।’

পুতিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘ইউক্রেনকে বিদ্রোহীদেরকে লক্ষ্য করে গুলি করা বন্ধ করতে হবে, না হলে এর পরিণতি মোকাবেলা করতে হবে। এর কিছু পরেই বিদ্রোহী অঞ্চলকে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি দুটি ডিক্রিতে সই করেন। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়ার সেনাবাহিনী সেখানে শান্তিরক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকবে।’

ক্রেমলিন জানিয়েছে, জার্মানি ও ফ্রান্সের নেতাদের ফোনকলে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান পুতিন।

পরে ডিক্রিতে সই করে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে তিনি ভাষণ দেন। বিবিসি, সিএনএনসহ একাধিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিবিসির মস্কোর সংবাদদাতা স্টিভ রোসেনবার্গ বলছেন, অনেক বছর আগে যখন রাশিয়া প্রথম পূর্ব ইউক্রেনে সৈন্য সমাবেশ ঘটায় তখন মস্কোই মূলত এই বিদ্রোহী অঞ্চল সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু তাদের স্বাধীনতার ব্যাপারে ভ্লাদিমির পুতিনের এই আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি ইতিহাস বদলে দেওয়া একটি মুহূর্ত।

প্রথমত, এটা মূলত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়া শান্তি প্রক্রিয়াকে মেরে ফেলা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় পুতিন নিজেও অঙ্গীকারবদ্ধ ছিলেন। একই সঙ্গে পূর্ব ইউক্রেনে একটা বড় ধরনের সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ার শঙ্কা তৈরি করেছে। আর এই ডিক্রিতে সই করার অর্থ হলো- এটা পরিষ্কার যে ভ্লাদিমির পুতিন ইতিমধ্যে ওইসব বিদ্রোহী এলাকায় সৈন্য পাঠাচ্ছে।

পূর্ব ইউক্রেনে সেনা পাঠানোর নির্দেশ

স্বাধীন ঘোষিত দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে সেনা পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে রাশিয়া। এমন হঠকারী নির্দেশের ফলে শীঘ্রই বড় কোনো যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পশ্চিমা দেশগুলো।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলোনস্কি বলেছেন, শান্তি চাই। কিন্তু রাশিয়ার হাতে দেশকে তুলে নয়। কূটনৈতিকভাবে সংকটের সমাধান করতে চাই।

এদিকে ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করলে রাশিয়ার ওপর অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে শাসিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও বলেছেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরুর পেছনে অশুভ উদ্দেশ্য কাজ করছে। ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রুস বলেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে আজই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাজ্য।

ইউক্রেনে রুশ হামলার নিন্দা জানিয়ে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেন, ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ‘অযৌক্তিক, অগ্রহণযোগ্য ও অযাচিত’। অন্যদিকে এক বিবৃতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বলছে, ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ইউরোপকে এগিয়ে আসতে হবে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর