নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ৫:২৯ : অপরাহ্ণ
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিনকে গণমাধ্যমে যে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে তাকে একতরফা বলে দাবি করেছেন সংস্থাটির সচিব মাহবুব হোসেন।
সেই সঙ্গে তিনি শরীফের অপসারণ নিয়ে ওঠা ১৩ অভিযোগের ব্যাখ্যাও দিয়েছেন।
আজ রোববার দুদকের কনফারেন্স রুমে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শরীফকে অপসারণের আদেশ জারির পর থেকেই বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় বিষয়টি প্রচারিত হচ্ছে। মূলত একতরফা তথ্যের ভিত্তিতেই এই সংবাদ প্রচারিত হচ্ছে, যা প্রকৃত ঘটনার বিপরীত।’
তবে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আগেই কেন শরীফকে চাকরিচ্যুত করা হলো দুদক সচিব এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি।
দুদক সচিব বলেন, ‘অপসারণকৃত উপ-সহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন দায়িত্ব পালনকালে যে কোনো অভিযোগ অনুসন্ধান ও তদন্ত করে প্রতিবেদন দেবেন এটাই স্বাভাবিক। গুরুত্বপূর্ণ বা কম গুরুত্বপূর্ণ যাই হোক না কেন দুদকের অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত সব কর্মচারীই নির্ভয়ে এবং নির্মোহভাবে দায়িত্বপালন করেন। কিন্তু শরীফ উদ্দিনের মতো কোনো অজুহাত তারা উত্থাপন করেন না।’
আরও পড়ুন: দুদকের শরীফ কেন চাকরিচ্যুত, তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে ১০ আইনজীবীর চিঠি
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘কর্মচারীদের অসদাচরণ ও অন্যান্য অপরাধের জন্য শৃঙ্খলা এবং আচরণ বিধি রয়েছে। দুদক (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালার ৫৪(২) বিধিতে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই অপসারণের বিধান রয়েছে। তার ক্ষেত্রে এ বিধিমালার প্রয়োগ করা হয়। কমিশন এও মনে করে যে, প্রশাসনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে শাস্তি প্রয়োগ করা উচিত। কিন্তু কমিশনের শৃঙ্খলা ও সুষ্ঠু কার্যক্রম পরিচালনার স্বার্থে শরীফ উদ্দিনকে ৫৪ (২) বিধিমতে অপসারণ করা হয়েছে। কমিশনের সভায় বিস্তারিত আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।’
উল্লেখ্য, গত বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুদক চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সই করা এক প্রজ্ঞাপনে মো. শরীফ উদ্দিনকে অপসারণ করা হয়।
ওই প্রজ্ঞাপনে দুর্নীতি দমন কমিশন (কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ৫৪ (২)-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে তাকে অপসারণ করার কথা বলা হয়।
দুদক সচিব বলেন, ‘কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের কিছু মামলায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দুর্নীতি উদ্ঘাটনের কারণে তাদের প্রভাবে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে বলে যা বলা হচ্ছে এটা মোটেও সত্য নয়। বাস্তবতা বিবেচনায় কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে কর্মরত জেলা পর্যায়ের ব্যক্তিদের আর কতটুকুই বা প্রভাব থাকতে পারে! কমিশনের প্রায় সব অনুসন্ধান ও তদন্তকারী কর্মচারী চট্টগ্রাম বা কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট মামলায় উল্লিখিত অভিযুক্ত বা আসামিদের অপেক্ষা অনেক গুরুত্বপূর্ণ উঁচু পদ-পদবির ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আদালতে বিচারের পর তাদের সাজাও হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ এ ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করেননি। তাদের কারণে কমিশনকে এভাবে বিব্রত হতে হয় না।’
মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আপনাদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, দুর্নীতি দমন কমিশন কোনো প্রভাব আমলে নেয় না এবং প্রভাবিত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় না।’