নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:৪৮ : অপরাহ্ণ
অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরুর পর প্রথম শুক্রবার ছুটির দিনে মেলার পরিবেশ ছিল জমজমাট।
সব বয়সী বইপ্রেমীদের ছিল ভিড়। স্টল-প্যাভিলিয়নে বই হাতে নিয়ে মলাট উল্টিয়ে দেখছিলেন তারা।
মেলা শুরুর তিন দিনের মাথায় বেচাকেনা শুরু হওয়ায় খুশি প্রকাশনা সংস্থাগুলো।
যদিও মেলার পরিধি বাড়িয়ে দেওয়ায় বই খুঁজতে অনেক পথ হেঁটে ক্লান্ত হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতা-দর্শনার্থীদের।
শুক্রবার সকাল ১১টা থেকে মেলা শুরু হলেও মূলত বিকেল গড়ালে ভিড় বাড়তে থাকে।
সন্ধ্যায় দেখা যায়, জনতাল ঢল। আড্ডা, বই কেনা আর ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকেন বইপ্রেমীরা।
কোনো কোনো স্টলে দেখা যায়, প্রিয় লেখকের সঙ্গে ছবি তোলায় ব্যস্ত ক্রেতারা।
শিক্ষার্থী মো. ফয়সাল বলেন, ‘প্রতি বছরই বইমেলায় আসি। করোনাকালীন পরিস্থিতিতে মেলা নিয়ে শঙ্কা ছিল। শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে। বন্ধের দিন মেলায় মানুষের উপস্থিতি দেখে আমার সাহস অনেকটাই বেড়ে গেছে। আসতে পেরে এবং বই কিনতে পেরে আমি খুশি।’
অনলাইন বই বিপণনে যুক্ত মাহবুব সেতু বলেন, ‘এবারের মেলা তো প্রথম সপ্তাহেই জমে ওঠেছে। ক্রেতারা বই কিনছেন। প্রথম দিন থেকেই নতুন বইয়ে মুখর হয়ে ওঠেছে মেলা।’
শিখা প্রকাশনীর প্রকাশক নাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘নতুন অনেক বই এখনও মেলায় আসেনি। বইপাড়ায় এখন চরম ব্যস্ততা। এরই মধ্যে পাঠকদের আনাগোনা বেড়েছে। ছুটির দিন হওয়ায় বিক্রিও কিছুটা বেশি। মানুষ বইমুখী হতে চায়, করোনাকালীন বইমেলায় মানুষের ঢল সেটিই প্রমাণ করে।’
বাংলা একাডেমির জনসংযোগ বিভাগের তথ্য অনুযায়ী মেলার চতুর্থ দিনে নতুন বই এসেছে ১৭৭টি।
প্রকাশিত নতুন বইয়ের মধ্যে পার্ল পাবলিকেশন্স এনেছে মোস্তফা মামুনের কিশোর ভৌতিক ‘আনিস সাহেবের আয়না’, পাঠচিত্র এনেছে সাইফ সুমনের নাটকের বই ‘উপন্যাস থেকে নাটক’, চৈতন্য এনেছে শাহনাজ মুন্নীর ‘নির্বাচিত গল্প’, আদর্শ এনেছে মাহবুব মোর্শেদের ‘অপ্রকাশিত জীবনানন্দ’, বাংলা একাডেমি এনেছে জালাল ফিরোজের ‘অমর একুশে বইমেলার ইতিহাস’, থকবিরিম এনেছে গারো নারী ফুটবলার মারিয়া মান্দার জীবনিভিত্তিক বই।
শুক্রবার বিকেল ৩টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘আন্তর্জাতিক বলয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্বজিত সাহা।
আলোচক ছিলেন ইকবাল হাসান, তাজুল ইমাম ও ইউসুফ রেজা। সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব অসীম কুমার দে।
পরে বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠিত হয় ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী: মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহীদ রেজা নূর ও শহীদ ইকবাল। আলোচক ছিলেন আমিনুর রহমান সুলতান ও প্রশান্ত মৃধা। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী।
এ ছাড়া ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন আসলাম সানী ও সাধনা আহমেদ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি রবীন্দ্র গোপ, হারিসুল হক, ওবায়েদ আকাশ ও রনজু রাইম।
শনিবার পঞ্চম দিন মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৩টায় মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী : উন্নয়নের নারী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান।
প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জোবাইদা নাসরীন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ফওজিয়া মোসলেন ও তাসমিমা হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন নাছিমা বেগম।