নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:৫৪ : অপরাহ্ণ
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী নূরনবী ওরফে ম্যাক্সনকে ভারতের কলকাতায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গেলো শুক্রবার উত্তর চব্বিশ পরগনার ডানলপ এলাকার একটি ফ্ল্যাটবাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সেখানকার ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)।
সোমবার সকালে সিএমপির বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি মো. কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা ম্যাক্সনকে দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেবেন।
ম্যাক্সন চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানাধীন জাহানপুর আলতাফ মিয়া বাড়ির আবদুল লতিফের ছেলে।
জানা গেছে, ম্যাক্সনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে, খুন-চাঁদাবাজির অভিযোগে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানায় ১১টি ও পাঁচলাইশ থানায় ২টি মামলা আছে। এর মধ্যে সাতটি মামলায় তার বিরুদ্ধে আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে।
বায়েজিদ থানার ওসি জানান, ২০১১ সালে বায়েজিদ বোস্তামি থানা পুলিশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সন্ত্রাসী ম্যাক্সনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্যে সরওয়ারকে গ্রেপ্তার করা হয়। ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে কারাগার থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে দুজনই কাতারে পালিয়ে যায়।
সেখানে চাঁদাবাজির টাকার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ালে গত বছরের ডিসেম্বরে দুজনকেই গ্রেফতার করে সে দেশের পুলিশ। এর কয়েকদিন পর ম্যাক্সনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হলেও পুলিশ তা জানতে পারেনি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি দেশে ফেরত পাঠানো হয় সরোয়ারকে। ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছার পর ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করে ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছেই ম্যাক্সন ভারতে পালিয়ে যাওয়ার তথ্য পায় পুলিশ।
ভারতীয় গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, কলকাতার উপকণ্ঠে ডানলপ এলাকায় ভাড়া করা ফ্ল্যাটবাসা থেকে ম্যাক্সনকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তমাল চৌধুরী ছদ্মনামে তিনি বেশ কিছুদিন ধরেই ওই এলাকায় বসবাস করছেন। নিজেকে পরিচয় দিতেন মাছ ব্যবসায়ী হিসেবে।
দালাল ধরে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট জোগাড় করেছেন। গ্রেপ্তারের সময় তার সঙ্গে ভারতীয় একজন নারীও ছিলেন।
এ সময় ম্যাক্সনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ বাংলাদেশি টাকা ও মোবাইলের সিম কার্ড জব্দ করা হয়েছে। আদালতের অনুমতি নিয়ে তাকে জেরা করছেন ভারতের গোয়েন্দারা।
তার বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশ, বেআইনিভাবে বসবাস, জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে।
তার ব্যাপারে কলকাতার ভারতীয় দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।
সিএমপি সূত্র জানায়, চট্টগ্রামের দুর্ধর্ষ শিবির ক্যাডার ও পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ২২ মামলার আসামি নূরনবী ওরফে ম্যাক্সন দে।
ম্যাক্সন ও সরোয়ার চট্টগ্রামের আলোচিত এইট মার্ডার মামলায় ফাঁসির দণ্ড প্রাপ্ত আসামি শিবির ক্যাডার সাজ্জাদের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
স্থানীয়রা জানায়, সারোয়ার ও ম্যাক্সন বিদেশে বসে মোবাইল ফোনে বায়েজিদ বোস্তামী এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে হুমকি-ধমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করত।
প্রবাসে বসে চাঁদা দাবির এক ঘটনায় গত বছরের ২৫ অক্টোবর বায়েজিদ বোস্তামী থানায় মামলা করেন আবদুল ওয়াজেদ নামে অক্সিজেন নয়াহাট এলাকার এক ব্যবসায়ী।