নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ৭:৩১ : অপরাহ্ণ
র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা জারি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, ‘যেহেতু আমরা পলিটিক্যালি-স্ট্রাটিজিক্যালি খুব ভালো অবস্থানে আছি, আমাদের আশেপাশের বড় বড় দেশ এবং আমাদের সমুদ্র অ্যাকসেসের জন্য অনেক বেশি উদ্বিগ্ন, সেই জন্য এখন আমরা সবার চক্ষুসূল। আসল উদ্দেশ্য কিন্তু হিউম্যান রাইটস (মানবাধিকার) না। আসল উদ্দেশ্য গুম-খুন না। আসল উদ্দেশ্য, এসব চাপ দিয়ে স্বার্থ হাসিল করা যায় কিনা।’
আজ শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে সেন্টার ফর নন রেসিডেন্ট বাংলাদেশি আয়োজিত ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সম্মেলন শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকরা মন্ত্রীর কাছে জানতে চান-বলা হয়েছে আমেরিকা থেকে নতুন করে কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসবে না, এ রকম কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া গেছে কিনা?
জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা আমি জানি না। যিনি বলেছেন, তিনি ভালো জানেন। আই ডোন্ট নো।’
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দৃঢ়ভাবে সমর্থন করি: মিকস
গুম-খুনের বিষয়ে আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের দেশে এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স শব্দই তো নেই! আমরা চাই না কাউকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা চাই প্রত্যেকের আইনের মাধ্যমে বিচার হবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘একটা-দুইটা দুর্ঘটনা ঘটে যেগুলোর খবর আমরা ঠিক মতো পাই না। যেমন আমরা অনেক দিন ধরে জানি হারিছ চৌধুরী (বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী) সাহেব গুম হয়ে গিয়েছিলেন। এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স। এখন দেখি না, উনি দেশেই ছিলেন এবং দেশেই নাকি মারা গেছেন। তার মেয়ে বলেছে। আমরা এক সময় দেখলাম, একজন নেতা তিনি দেশে নেই, তারপর ইন্ডিয়ার হোটেল ইন্ডিয়ানরা তাকে ধরলো। ওই সব গুম-খুন বলা হয়, কতটুকু সত্য তা আমরা ঠিক জানি না। একটা লোক গুম হোক, একটা লোক খুন হোক আমরা চাই না।’
আরও পড়ুন: দেশে কেউ গুম হয় না, আত্মগোপনে থাকে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আবদুল মোমেন বলেন, ‘আমেরিকায় প্রতি বছর হাজার খানেক লোকের বিনা বিচারে মৃত্যু হয়। পুলিশ মেরে ফেলে। প্রতি বছর তার দেশে লাখ খানেক লোক নিখোঁজ হয়, ওইটা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই। আমরা চাই আমাদের দেশে একটি লোকও…আমাদের দেশে এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স শব্দই তো নেই! আমরা চাই না কাউকে জোরপূর্বক উঠিয়ে নিয়ে যাবে। আমরা চাই প্রত্যেকের আইনের মাধ্যমে বিচার হবে। মাঝে মাঝে বিভিন্ন সন্ত্রাসী গ্রুপ এসব করে। পৃথিবীর সব দেশেই হয়, কম-বেশি। আমাদের এখানে অন্য দেশের তুলনায় সবচেয়ে কম হয়।’
‘বাংলাদেশ নাকি চায়নার লেজুড় হয়ে যাচ্ছে’- এমন অভিযোগকে ডাহা মিথ্যা কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশিরা বলেন বাংলাদেশ চায়নার ডেড ট্র্যাপে পড়ে যাচ্ছে। অনেক জ্ঞানপাপী বলছেন, বাংলাদেশ নাকি শ্রীলঙ্কার মতো চীনা ঋণের ফাঁদে পড়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ সতর্ক হও। তারা যেটা বলছে, সেটা ঠিক নয়। আমরা কখনও ডেড রিপেমেন্টে একদিনও দেরি করি নাই। এই বদনাম আমাদের নেই।’
আবদুল মোমেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের মতে ঋণের ফাঁদে পড়তে হলে ৪০ শতাংশ ঋণ নিতে হয়। আমরা ঋণ নিয়েছি মাত্র ১৬ শতাংশ। বেশির ভাগ ঋণ নিই বিশ্বব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে। জাপান থেকেও ঋণ নিয়ে থাকি। চীনা ঋণ এসবের ধারে-কাছেও নেই।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ৮০ পারসেন্ট ইকুপমেন্ট নাকি চায়না থেকে কেনা। এটা একটা ডাহা মিথ্যা। আমরা তো সামরিক সরঞ্জাম যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক থেকেও কিনছি। অনেক দেশ থেকেই কিনছি। ভারতও আমাদের কিছু দিতে চাচ্ছে। তারা কিছু লাইন অব ক্রেডিট দিয়েছে, অস্ত্র কেনার জন্য। আমাদের আর্মিরা বিষয়টা জানে, তারা কি কিনবে।’