নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ১০:৩৮ : অপরাহ্ণ
ফেসবুক লাইভে এসে পিস্তল দিয়ে মাথায় গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন চিত্রনায়ক রিয়াজ আহমেদের শ্বশুর ব্যবসায়ী আবু মহসিন খাঁন।
আজ বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার ৭ নম্বর সড়কের ২৫ নম্বর বাড়ির নিজ বাসায় এই ঘটনা ঘটান তিনি।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৮ বছর।
আত্মহত্যার আগে রাত সাড়ে ৮টায় ফেসবুক লাইভে এসে বার্ধক্যের নিঃসঙ্গতা নিয়ে কথা বলেন মহসিন।
সাম্প্রতিককালে নিকট আত্মীয়দের মৃত্যুর ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমি ক্যান্সার আক্রান্ত। আমার ব্যবসা এখন বন্ধ। আমি বাসায় একাই থাকি। আমার এক ছেলে থাকে অস্ট্রেলিয়ায়। আমার ভয় করে যে, আমি বাসায় মরে পড়ে থাকলে, লাশ পঁচে গেলেও কেউ হয়তো খবর পাবে না।’
ফেসবুক লাইভে মহসিন আরও বলেন, ‘পিতামাতা যা উপার্জন করে তার সিংহভাগ সন্তানদের পেছনে খরচ করে। প্রকৃত বাবারা না খেয়েও সন্তানদের খাওয়ানোর চেষ্টা করে, ফ্যামেলিকে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু ফ্যামেলি অনেক সময় বুঝতে চায় না। নিজেকে আর মানিয়ে নিতে পারলাম না। যারা দেখছেন, তাদের সাথে এটাই শেষ দেখা। সবাই ভালো থাকবেন।’
এরপর কালেমা পড়তে পড়তে নিজের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করেন তিনি। তার আগে পিস্তলের লাইসেন্স দেখান।
বলেন, ‘আমি যেটা দিয়ে আত্মহত্যা করছি সেটি ইলিগ্যাল কিছু না। এটির লাইসেন্স আছে। সেটি নবায়নও করা হয়েছে। আমি চলে যাবো। আত্মীয় স্বজন যারা আছো, যেহেতু বাবাও আমাকে জায়গাটা দেয়নি, আমি যে কবরস্থানটা করেছি সেখানে আমাকে দাফন করো না। মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধে একটি কবরস্থান হয়েছে, সেখানে তোমরা আমাকে দাফন করে দিও। প্রত্যেকটা লোক আমার সাথে প্রতারণা করেছে। আমার বাবা, মা, ভাইরা, প্রত্যেকটা লোক, এভরিওয়ান।’
মহসিন চেয়ারে বসে ফেসবুক লাইভে কথা বলেন। তার সামনে টেবিল ছিল। ওই টেবিলে কাফনের কাপড় ছিল। এর ওপর একটি চিরকুট ছিল; তাতে লেখা আছে, ‘এখানে কাফনের কাপড় রাখা আছে। যা আমি ওমরা হজে ব্যবহার করেছিলাম।’
ধানমন্ডি থানার ওসি একরাম আলী মিয়া জানান, ব্যবসায়ী মহসিন ধানমন্ডির বাসায় একাই থাকতেন। নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নায়ক রিয়াজ বলেন, ‘আমার শ্বশুর কেন আত্মহত্যার মতো সিদ্ধান্ত নিলেন বুঝতে পারছি না। আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। আপাতত কিছু বলতে পারছি না।’