রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ৯:৫৫ : পূর্বাহ্ণ
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বিনষ্ট, বিরোধীদের দমন ও প্রহসনের বিচারে সহযোগী ভূমিকার জন্য মিয়ানমারের প্রধান বিচারপতিসহ আট ব্যক্তি ও দুই প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা।
দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থানের এক বছর সামনে রেখে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার পররাষ্ট্র দপ্তর পৃথক বিবৃতিতে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি জানিয়েছে।
মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম মিয়ানমার টাইমস, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এবং ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মিয়ানমারের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি টুন টুন ও, অ্যাটর্নি জেনারেল থিডা ও, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান টিন ও, প্রধান নির্বাচন কমিশনার থেইন সোয়ে, জান্তার সহযোগী ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি তে যা, তার দুই ছেলে টু টেট তে যা এবং পি ফিয়ো তে যা এবং জান্তার আরেক
সহযোগী ব্যবসায়ী জনাথন মিয়ো কিয়াউ থং।
প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়কের প্রতিরক্ষা ক্রয় পরিদপ্তর এবং জান্তার সহযোগী ব্যবসায়ী জনাথন মিয়ো কিয়াউ থংয়ের প্রতিষ্ঠান কে টি সার্ভিসেস অ্যান্ড লজিসটিকসকে (কেটিএসএল)।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণায়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ওই ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে অবমূল্যায়ন করেছেন।
এর আগে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক সিনিয়র জেনারেল অং মিন হ্লাইংসহ শীর্ষ অধিনায়কদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল এই তিন দেশ। তাদের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগ আনা হয়েছিল।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন দপ্তর জানায়, মিয়ানমারের অ্যাটর্নি জেনারেল থিডা ও, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের প্রধান থেইন সোয়ে ও দুর্নীতি দমন কমিশনের সভাপতি টিন টিন ও এখন মিয়ানমারে বিরোধীদের দমনে মুখ্য ভূমিকা পালন করছেন।
তারা ২০২০ সালে মিয়ানমারে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দায়ী।
নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপি সংক্রান্ত অন্যায্য দাবিকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থানকে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
মিয়ানমারের অ্যাটর্নি জেনারেল ও দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধানরা দেশজুড়ে গণতন্ত্রপন্থীদের দমন ও স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ নির্বাচিত নেতাদের প্রহসনের বিচার দেখাশোনা করেছেন।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ওই ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডায় ঢুকতে পারবেন না।
এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিভাগের নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মার্কিনরা আর্থিক লেনদেন ও ব্যবসা করতে পারবেন না।
একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের কোনো সম্পদ থাকলে তা বাজেয়াপ্ত করা হবে।
গত বছর ১ ফেব্রুয়ারি অং সান সু চি’র প্রশাসনকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিয়ানমারের জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের সামরিক সরকার ক্ষমতা দখল করে।
দেশটির জনগণ শুরু থেকেই মেনে নিতে পারেনি সামরিক শাসন।
গত এক বছর ধরে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে থাকে এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর গুলিতে অসংখ্য বিক্ষোভকারী ও বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।