রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১০ জিলকদ, ১৪৪৫

মূলপাতা আইন-আদালত

সিনহা হত্যা মামলা

ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতের ফাঁসির আদেশ, ৬ জনের যাবজ্জীবন


প্রতিনিধি, কক্সবাজার প্রকাশের সময় :৩১ জানুয়ারি, ২০২২ ৪:২৬ : অপরাহ্ণ
ছবি: সংগৃহীত
Rajnitisangbad Facebook Page

বহুল আলোচিত সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

এতে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ ও এসআই লিয়াকতকে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) নন্দ দুলাল রক্ষিত (৩০), কনস্টেবল সাগর দেব, ওসি প্রদীপের দেহরক্ষী রুবেল শর্মা (৩০), স্থানীয় বাসিন্দা বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের মো. নুরুল আমিন (২২), মো. নিজাম উদ্দিন (৪৫) ও মোহাম্মদ আইয়াজকে (৪৫)।

খালাস পেয়েছেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. লিটন মিয়া (৩০), কনস্টেবল ছাফানুর করিম (২৫), মো. কামাল হোসাইন আজাদ (২৭), মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান আলী (৪৭), কনস্টেবল মো. রাজীব হোসেন (২৩) ও আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (২০)।

আজ সোমবার বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাঈল এই রায় দেন।

হত্যাকাণ্ডের ১৮ মাসের মাথায় এ রায় দিলেন আদালত।

আদালত বলেছেন, হত্যা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন, লাথি মারা, সহযোগিতায় হত্যা, মৃত্যু নিশ্চিত, আলামত নষ্ট, খুন ও মাদক মামলা করে অপরাধ করেছেন প্রদীপ।

পাশাপাশি লিয়াকত গুলি করে হত্যা, নাটক সাজানো, হত্যার পরিকল্পনা করা, শাস্তিমমূলক অপরাধ করেছেন।

আরও পড়ুন:

২০ সেকেন্ডের মধ্যে লিয়াকত দৌড়ে এসে সিনহাকে গুলি করে: বিচারক

রায় শুনে ছটফট করছিলেন ওসি প্রদীপ

এর আগে ২টার দিকে এই মামলার ১৫ আসামিকে কঠোর নিরাপত্তায় আদালত চত্বরে আনা হয়।

এরপর তাদের আদালতের কাঠগড়ায় রাখা হয়। তাদের উপস্থিতিতে এ মামলার রায় ঘোষণা হয়।

রায়কে ঘিরে সকাল থেকে কক্সবাজার জেলা আদালত এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছিল।

সে সময় আদালতের ফটকসহ সবদিকে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজারের টেকনাফে এপিবিএন চেকপোস্টের সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খানকে।

অবসরে যাওয়ার পর ‘লেটস গো’ নামে একটি ভ্রমণ বিষয়ক ডকুমেন্টারি বানানোর জন্য প্রায় একমাস ধরে কক্সবাজারের হিমছড়ি এলাকায় ছিলেন রাশেদ।

তার সঙ্গে ছিলেন স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী সাহেদুল ইসলাম সিফাত ও শিপ্রা দেবনাথ।

পুলিশ সে সময় বলেছিল, সিনহা তার পরিচয় দিয়ে ‘তল্লাশিতে বাধা দেন’। পরে ‘পিস্তল বের করলে’ চেক পোস্টে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে গুলি করে।

বিষয়টি উল্লেখ করে এসআই নন্দদুলাল রক্ষিত বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় একমাত্র আসামী করা হয় সিনহার সঙ্গি সিফাতকে।

কিন্তু সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডের ৬ দিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজারের আদালতে মামলা করেন।

আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়।

তদন্ত শেষে র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর চার্জশিট প্রদান করেন।

এরপর ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন।

তারপর ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ দফায় ৮৩ জন স্বাক্ষীর মধ্যে ৬৫ জন সাক্ষ্য প্রদান করেন।

৬ ও ৭ ডিসেম্বর আসামিরা ফৌজদারি কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন।

সবশেষে গত ৯ থেকে ১২ জানুয়ারি মামলায় দু’পক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করলে বিচারিক কার্যক্রম শেষ হয়।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর