প্রতিনিধি, সিলেট প্রকাশের সময় :২৬ জানুয়ারি, ২০২২ ৯:৪২ : অপরাহ্ণ
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের আন্দোলন যৌক্তিক উল্লেখ করে তাদের সকল দাবি-দাওয়া বাস্তবায়ন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় হলের সমস্যা নিয়ে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কীভাবে ভিসি বিরোধীতায় রূপ নিলো, তা খতিয়ে দেখা হবে।’
আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর হেয়ার রোডে সরকারি বাসভবনে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের হামলার ঘটনাকে দুঃখজনক মন্তব্য করে দীপু মনি বলেন, ‘এ হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কারও যদি কোনো ত্রুটিবিচ্যুতি থাকে, অবহেলা থাকে তবে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা তিনি যেই হোন না কেন।’
শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত মামলার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনে ক্ষতি হোক সেটা আমরা চাই না। মামলার ফলে শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হবে না।’
উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে দীপু মনি বলেন, ‘ভিসির পদত্যাগ অন্য বিষয়। তাকে রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেন। তিনি পদত্যাগ করলেই তো সমস্যার সমাধান হবে না। এক ভিসি যাবেন, আরেক ভিসি আসবেন। সমস্যার জায়গায় সমস্যা থেকে যাবে।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘টানা আন্দোলনে তারা বিপর্যস্ত হয়ে আছে, এক্সোজটেড হয়ে আছে। তারা একটু সুস্থ হয়ে উঠুক। যদি তারা বলে, কয়েকটা দিন সময় দিয়ে বসতে চায়, তবে তাই হবে। এই আন্দোলন তো তাদের অভাব-অভিযোগের বহিঃপ্রকাশ। মূল সমস্যাটা আসলে কোথায়, সেটা আমরা শিক্ষার্থী, শিক্ষক, প্রশাসন, আমরা সবাই মিলে তা আলোচনা করবো।’
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘শান্তিপূর্ণ’ উল্লেখ করে দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনা পক্ষ-বিপক্ষ নাই। আমরা সবাই একপক্ষে, সমস্যাটা আরেকপক্ষে। আমরা বলছি, সমস্যা সমাধান খুব জরুরি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পরিবেশ যেন সুস্থ, সুষ্ঠু থাকে, তারা যেন পড়াশোনা করতে পারে সেজন্য এই সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই ৫ শিক্ষার্থী
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেছা চৌধুরী ছাত্রী হলের প্রভোস্টের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগে ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলন শুরু হয়।
গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এসময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।
এ ঘটনায় ৩০০ জনকে অজ্ঞাত দেখিয়ে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ।
এরপর থেকে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে অনশন চালিয়ে আসছিলো শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার সকাল সকাল সোয়া ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হকের উপস্থিতিতে অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা।
তবে অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।