রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ জানুয়ারি, ২০২২ ৫:৩৭ : অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) প্রথমবারের মতো জয়ের স্বাদ পেলো মিনিস্টার ঢাকা।
টুর্নামেন্টের পঞ্চম ও নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ফরচুন বরিশালকে ৪ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল ঢাকা।
অন্যদিকে, নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে হারের স্বাদ পেলো সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন বরিশাল।
আজ রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২৯ রানের সংগ্রহ গড়ে ফরচুন বরিশাল।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৫ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ঢাকা।
জয়ের জন্য ১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে মিনিস্টার ঢাকা।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই মাত্র ১০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসে ঢাকা।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই উইকেট শিকারের উল্লাসে মাতে বরিশাল।
নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে টানা ফিফটি করা ঢাকার ওপেনার তামিম ইকবালকে এই ম্যাচে খালি হাতে সাজঘরের পথ ধরান শফিকুল ইসলাম।
ফলে দলীয় রানের খাতা খোলার আগেই উইকেট হারায় মিনিস্টার ঢাকা।
দ্বিতীয় ওভারে বল করতে এসে ঢাকার জোড়া উইকেট তুলে নেন আলজারি জোফেস।
ওভারের চতুর্থ বলে মোহাম্মদ নাঈম (৪) এবং শেষ বলে জহুরুল ইসলামকে (০) শিকার করেন তিনি।
পরের ওভারে ঢাকা শিবিরে আবারও আঘাত হানেন শফিকুল ইসলাম।
ব্যাটারদের যাওয়া-আসার মাঝে প্রতিরোধ গড়ে তোলার যুদ্ধে হার মানেন মোহাম্মদ শাহজাদ।
শফিকুলের বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে ৭ বলে এক চারে ৫ রান করেন তিনি।
পর পর উইকেট হারানোর মিছিয়ে দলীয় ১০ রানেই ৪ উইকেট হারায় ঢাকা।
শুরুতেই চার উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়া ঢাকাকে খেলায় ফেরান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং শুভাগত হোম।
দুজনের ব্যাটে ইনিংসে ৮ম ওভারে দলীয় রান ৫০ রান পার করে ঢাকা।
তবে ১৪তম ওভারে ব্রাভোর প্রথম বলে ক্যাচবন্দি হন শুভাগত হোম।
২৫ বলে ২ চারে ২৯ রান করেন শুভাগত। দলের ব্যাটিং ধসে হাল ধরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সাথে ৬৯ রানে জুটি গড়েন তিনি।
শুভাগত হোম ফিরে গেলে দলীয় ৭৯ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় ঢাকা।
পরের ওভারেই ১৯ রান তুলে নেয় ঢাকা। আলজারি জোসেফের করা ইনিংসের ১৫তম ওভারে রাসেল ১১ এবং রিয়াদ ৮ রান নেন।
ওই ওভারেই ম্যাচ হাতের মুঠোয় নিয়ে নেয় ঢাকা।
১৫তম ওভার শেষে ঢাকার দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ১০২ রান।
তাইজুলের করা ১৭তম ওভারের শেষ তিন বলে রাসেলের দুই চার ও এক ছয়ে জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
সাকিবের করা ১৮তম ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে দলীয় স্কোর সমান করেন ম্যাচ সেরা ক্রিকেটার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
তবে দ্বিতীয় বলে ক্যাচবন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরেন তিনি।
জয় থেকে মাত্র রান দূরে থাকতে ব্যাট হাতে মাঠে নেমে বাকি কাজটুকু সারেন ইসুরু উদানা (১*)।
ব্যাট হাতে অপর প্রান্তে ৩১ অপরাজিত ছিলেন আন্দ্রে রাসেল। ১৫ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় এ রান করেন তিনি।
ব্যাট করতে নেমে প্রথম ১০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়লেও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শুভাগত হোম এবং শেষ দিকে আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ে জয় তুলে নেয় মিনিস্টার ঢাকা।
এর আগে ক্রিস গেইল, ডোয়াইন ব্রাভোর ৩৬ ও অপরাজিত ৩৩ রানে ভর করে ফরচুন বরিশাল ৮ উইকেটে ১২৯ রান তুলে।
ওপেনার নাজমুল হাসান শান্ত ৯ বলে ৫ রান করে শুভাগত হোমের বলে নাঈম শেখের তালুবন্দী হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন।
১৮ বলে ১৫ রান করে হাসানের মুরাদের শিকার হয়ে বিদায় নেন সৈকত আলি। রানের খাতা খোলার আগেই আন্দ্রে রাসেলের শিকার হন তৌহিদ হৃদয়।
টানা তিন ওভারে তিনটি উইকেট হারিয়ে বরিশালের স্কোর দাঁড়ায় ২৩ রানে ৩ উইকেট।
চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও ক্রিস গেইল।
তাদের ৩৭ রানের জুটি ভাঙে সাকিব আউট হলে। রুবেলের বলে মোহাম্মদ শাহজাদের হাতে ক্যাচ দেন সাকিব।
বরিশালের অধিনায়ক করেন ১৯ বলে ২৩ রান। সাকিবের ইনিংসের ছিল দুইটি চার ও একটি ছক্কা।
নুরুল হাসান সোহান ৫ বলে ১ রান করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের বলে বাউন্ডারিতে জহুরুল ইসলামের হাতে ধরা পড়েন সোহান।
তারপর গেইলও বিদায় নেন। ৩০ বলে ৩৬ রান করেন এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার।
তার ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ২টি ছক্কা। ইসুরু উদানার বলে ক্যাচ দেন গেইল।
বরিশালের ইনিংসে বাকি রান যোগ করেন ব্রাভো একাই।
এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারের ব্যাট থেকে আসে ২৬ বলে হার না মানা ৩৩ রান।
ব্রাভোর ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও ১টি ছক্কা। নির্ধারিত ২০ ওভারে বরিশাল সংগ্রহ করে ১২৯ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ফরচুন বরিশাল: ১২৯/৮ (২০), সৈকত ১৫, শান্ত ৫, সাকিব ২৩, হৃদয় ০, গেইল ৩৬, নুরুল ১, ব্রাভো ৩৩, জিয়া ১, জোসেফ ৪, তাইজুল ৫*; রুবেল ৩-০-৮-১, শুভাগত ৪-০-১৯-১, মুরাদ ২-০-১২-১, রাসেল ৪-০-২৭-২, উদানা ৪-০-২৯-২, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-৩১-১
মিনিস্টার ঢাকা: ১৩০/৬ (১৭.৩), তামিম ০, শেহজাদ ৫, নাইম ৪, জহুরুল ০, মাহমুদউল্লাহ ৪৭, শুভাগত ২৯, রাসেল ৩১*, উদানা ১*; শফিকুল ৩-১-২০-১, জোসেফ ৩-০-৩৪-২, সাকিব ৩.৩-০-২১-১, ব্রাভো ৩-০-১৬-১
ফলাফল: মিনিস্টার ঢাকা ৪ উইকেটে জয়ী।