রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২১ জানুয়ারি, ২০২২ ৫:৩১ : অপরাহ্ণ
করোনা শঙ্কা ছাড়াও নানা বিতর্ককে সঙ্গী করে আজ শুক্রবার পর্দা উঠেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ৮ম আসরের।
প্রথম ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশাল।
চট্টগ্রামের ছুঁড়ে দেওয়া ১২৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বরিশাল লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ১৮.৪ ওভারে।
ফরচুন বরিশাল ম্যাচ জিতেছে ঠিক, কিন্তু তাদের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে মেহেদী মিরাজের চট্টগ্রাম।
‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১২৫ রান সংগ্রহ করে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
ছোট লক্ষ্যে ব্যাট করে ফরচুন বরিশালকেও ভুগতে হয়েছে, খেলা গড়িয়েছে ১৯তম ওভার পর্যন্ত, হারাতে হয় ৬ উইকেট।
দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৯ সৈকত আলির ব্যাটে, জিয়াউর রহমান ১২ বলে অপরাজিত ১৯ রানে জয়ের পথ করেছেন সহজ।
লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতেই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তকে (১) হারায় ফরচুন বরিশাল।
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের বলে হয়েছেন বোল্ড।
সৈকত আলির সাথে ৩ নম্বরে নামা সাকিব আল হাসানের জুটিও ২৫ রানের বেশি যায়নি। এ দফায়ও সাকিবকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন মিরাজ।
২৮ রানে ২ উইকেট হারায় ফরচুন বরিশাল।
সেখান থেকে সৈকত আলি ও তৌহিদ হৃদয়ের ৩৪ রানের জুটি। মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে তৌহিদও (১৭ বলে ১৬) ফিরে যান।
তবে এক পাশ আগলে রাখা সৈকত আলি নতুন ব্যাটার ইরফান শুক্কুরকে নিয়ে জয়ের পথ মসৃণ করেন।
শরিফুল ইসলামের করা ১৪ তম ওভারে শুক্কুরের ব্যাট থেকে আসে দারুণ এক ছক্কা।
তবে মিরাজের করা পরের ওভারেই ম্যাচের মোড় নিজেদের দিকে নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। যেখানে ফরচুন বরিশাল হারায় ৩ উইকেট।
ওভারের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকান সৈকত আলি। দ্বিতীয় বলেই হয়েছেন আউট, ৩৫ বলে তার ব্যাটে ১ চার ২ ছক্কায় ৩৯ রান।
পরের বলে শুক্কুরকেও (১৩ বলে ১৬) এলবডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মিরাজ।
যদিও তার উইকেট নিয়ে আছে বিতর্ক, খালি চোখে দেখে মনে হচ্ছিলো মিস করবে লেগ স্টাম্প।
ডিআরএস না থাকায় রভিউ নেওয়ার সুযোগও ছিলো না শুক্কুরের। ওভারের শেষ বলে রান আউটে কাঁটা পড়েন সালমান হোসেন (০)।
৯২ রানে ৬ উইকেট হারায় বরিশাল। বেনি হাওয়েলের করা ১৬তম ওভারে আসে মাত্র ৪ রান, শেষ ২৪ বলে বরিশালের প্রয়োজন পড়ে ৩০।
মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধের করা ১৭তম ওভারে জিয়াউর রহমান ২চার, ১ ছক্কা হাঁকালে আসে ১৮ রান। আর তাতেই কার্যত বরিশালের অনিশ্চয়তা কেটে যায়।
শেষ পর্যন্ত ৮ বল হাতে রেখে আসে জয়, জিয়া ১২ বলে ১৯ ও ডোয়াইন ব্রাভো ১০ বলে ১২ রানে অপরাজিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম দলপতি মিরাজ ৪ ওভারে ১৬ রান খরচায় নেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
ইনিংসের প্রথম বলেই নাঈম হাসানকে ছক্কা হাঁকান ক্যারিবীয় ওপেনার কেনার লুইস। কিন্তু তৃতীয় বলেই তাকে থামিয়ে দেন নাঈম। ৬ রানেই থামে লুইসের ইনিংস।
নাঈমের পর দলকে সাফল্য এনে দেন আলজারি জোসেফ। ৬ রান করে আফিফ হোসেন ধ্রুব শিকার হন জোসেফের।
২২ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় চট্টগ্রাম।
এরপর ইনিংসের হাল ধরেন আরেক ওপেনার উইল জ্যাকস। কিন্তু সেও থিতু হতে পারেননি।
দলীয় স্কোর অর্ধশতকে পৌছতেই ৯ রান করে ফেরেন মিরাজ।
সুবিধা করতে পারেননি শামীম হোসেন পাটোয়ারিও। ২৩ বলে ১৪ রান করে ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
এরপর ক্রিজে নেমে দলের হাল ধরেন বেনি হাওয়েল। ইংলিশ অলরাউন্ডারের মারকুটে ব্যাটিং দলকে এনে দেয় সম্মানজনক পুঁজি।
শেষ ওভারের ৫ম বলে ডোয়াইন ব্রাভোর বলে আউট হওয়ার আগে ২০ বলে ৪১ রান করেন হাওয়েল। হাঁকান ৩টি করে চার-ছক্কা।
মূলত হাওয়েলের এই ঝড়েই ১২০ এর গন্ডি পার করতে পারে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
৮ উইকেটে ১২৫ রানে আটকে যায় তাদের ইনিংস।
মূলত চট্টগ্রামের ব্যাটিং ধস নামান আলজারি জোসেফ। তিনি ৩২ রান খরচে ৩ উইকেট নেন। তিনি চার ওভারে ৩২ রান খরচায় তিন উইকেট তুলে নেন।
নাঈম হাসান দুটি, ডোয়াইন ব্রাভো ও সাকিব আল হাসান একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ১২৫/৮ (২০ ওভার) হাওয়েল ৪১, জ্যাকস ১৬, নাঈম ইসলাম ১৫, শামীম ১৪; জোসেফ ৩২/৩ নাঈম ২৫/২, সাকিব ৯/১)।
ফরচুন বরিশাল: ১২৬/৬ (১৮.৪), শান্ত ১, সৈকত ৩৯, সাকিব ১৩, হৃদয় ১৬, শুক্কুর ১৬, ব্রাভো ১২*, সালমান ০, জিয়াউর ১৯*; মিরাজ ৪-০-১৬-৪, মুগ্ধ ৩-০-২৫-১
ফলাফল: ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: মেহেদী হাসান মিরাজ (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স)।
আরও পড়ুন: বিপিএলের সূচি: জেনে নিন কবে কখন কার খেলা