নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১১ জানুয়ারি, ২০২২ ১১:২০ : পূর্বাহ্ণ
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে এসে মুদ্রার উল্টা পিঠ দেখলো বাংলাদেশ।
মাউন্ট ম্যাঙ্গানুই টেস্টে একক আধিপত্য দেখানো টাইগাররা ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে এসে অসহায়ত্ব বরণ করেছে।
প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের গড়া ৫২১ রানের বিপরীতে ১২৬ রানে গুটিয়ে যায় মুমিনুল হকরা।
ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে লড়াই করলেও তাতে ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে পারেনি তারা।
১১৭ রান ও ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে সিরিজ সমতায় ফিরলো কিউইরা।
আজ মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করে বাংলাদেশ।
প্রায় তিন সেশন মিলিয়ে ৭৯ ওভার তিন বলে ব্যাট করে বাংলাদেশ।
লিটনের সেঞ্চুরি মাখা ইনিংসে ২৭৮ রানে ইনিংস গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের।
আজ মঙ্গলবার চরম হতাশা নিয়ে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ।
ফলোঅনে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশের প্রতিরোধ বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে দেয়নি কিইউ পেসাররা।
এক উইকেটে ৭১ রান করা বাংলাদেশ ১২৮ রানেই দলের টপ অর্ডারের ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে।
দলীয় ২৭ রানে ফেরেন ওপেনার সাদমান ইসলাম। তবে ২১ রানই এসেছিল সাদমানের ব্যাট থেকে। তিনি ফেরেন কাইল জ্যামিসনের শিকার হয়ে।
আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে গড়েন ৪৪ রানের জুটি। ২৯ রান করা শান্তকে ফিরেয়ে জুটি ভাঙেন নিল ওয়াগনার।
প্রথম সেশনে সাদমান-শান্তকে হারিয়ে ৭৪ রান তুলে টাইগাররা।
লাঞ্চের পর দলকে ভালোভাবেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন অভিষিক্ত নাঈম ও অধিনায়ক মুমিনুল। কিন্তু ইনিংসের ৩৭তম ওভারে নাঈমের আউট ম্যাচের মোড় ঘুড়িয়ে দেয়।
২৪ রান করা নাঈমকে ফেরার টিম সাউদি। এরপর ৩৭ রান করে মুমিনুল ফিরে যান ওয়াগনারের শিকার হয়ে।
দুই ওভার পর ইয়াসির আলিকেও (২) তুলে নেন ওয়াগনার।
বলতে গেলে ওয়ানগানের ওই স্পেলটাই ফের খাদের কিনারায় ঠেলে দেয় বাংলাদেশকে।
৫ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে চা বিরতিতে যান নুরুল হাসান সোহান ও লিটন দাস।
ম্যাচে বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র অর্ধশত ও পরবর্তীতে শতরানের জুটি আসে লিটন ও সোহানের জুটিতে।
ষষ্ঠ উইকেটে তারা গড়েন ১০১ রানের জুটি।
ড্যারিল মিচেলের বলে সোহান ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন। সোহানের ব্যাট থেকে আসে ৫৪ বলে ৩৬ রান।
লিটন ধীরে সুস্থে ব্যাটিং শুরু করলেও ওয়ানডে মেজাজে শতক হাঁকান।
বাউন্ডারির ফুলঝুরিতে লিটন খেলেন ১১৪ বলে ১০২ রানের ইনিংস।
আম্পায়ার্স কলে দুর্ভাগ্যজনকভাবে এলবিডব্লিউ হওয়ার আগে তিনি হাঁকান ১৪টি চার ও একটি ছক্কা। জেমিসনের শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
লিটন ফেরার পর বাংলাদেশকে অলআউট করতে বেশি সময় লাগেনি নিউজিল্যান্ডের।
জেমিসনকে উড়িয়ে মারতে নিয়ে মিড অনে ক্যাচ দেন শরিফুল ইসলাম।
এবাদতকে শিকার করে বাংলাদেশের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন জীবনের শেষ টেস্ট খেলতে নামা রস টেলর।
বাংলাদেশ অলআউট হয়ে ২৭৮ রানে। নিউজিল্যান্ড জয় পায় ইনিংস ও ১১৭ রানের ব্যবধানে।
এই জয়ের ফলে ১-১ এ সিরিজ ড্র করল নিউজিল্যান্ড।
৮ উইকেটে প্রথম ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৫২১/৬ ডিক্লেয়ার (১২৮.৫ ওভার)
ল্যাথাম ২৫২, কনওয়ে ১০৯, ব্লান্ডেল ৫৭*, ইয়ং ৫৪, টেলর ২৮;
এবাদত ২/১৪৩, শরিফুল ২/৭৯।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ১২৬/১০ (৪১.২ ওভার)
ইয়াসির ৫৫, সোহান ৪১, লিটন ৮, সাদমান ৭, নাঈম ০, শান্ত ৪, মুমিনুল ০;
বোল্ট ৫/৪৩, সাউদি ৩/২৮, জেমিসন ২/৩২।
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ২৭৮/১০ (৭৯.৩ ওভার)
লিটন ১০২, মুমিনুল ৩৭, সোহান ৩৬, শান্ত ২৯, নাঈম ২৪, সাদমান ২১;
জেমিসন ৪/৮২, ওয়াগনার ৩/৭৭।
নিউজিল্যান্ড ইনিংস ও ১১৭ রানে জয়ী।