নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৯ জানুয়ারি, ২০২২ ১১:৫১ : পূর্বাহ্ণ
নিউজিল্যান্ড-৩৪৯/১
এই স্কোরবোর্ডই বলে দিচ্ছে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্টে ক্রাইস্টচার্চে সবুজ ঘাসের মাঠে ব্যাট হাতে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর কতটা ছড়ি ঘুরিয়েছে!
ক্রাইস্টচার্চে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের পর ’পরাজয়ে ডরে না বড় দল‘ কথাটা বলাই যায়।
মাউন্ট মঙ্গানুই ‘বিপর্যয়’ যেন সুদূর অতীত তাদের কাছে।
হ্যাগলি ওভালে টস হেরে ব্যাট হাতে ওই বার্তায় দিয়েছেন টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ে।
টাইগার বোলাররা এলোমেলো বোলিংয়ে বেহিসেবি রান দিয়েছে। এমনকি এবাদত, তাসকিন ও শরিফুলদের বোলিংয়েও কোনো ধার ছিলনা।
সেই সঙ্গে বোলিংয়ের লাইন ও লেন্থও ঠিক রাখতে পারেননি না ।
সেই সুযোগে বেশ চমৎকার উইকেট কামড়ে ব্যাটিং করেছে স্বাগতিকরা।
প্রথম দিনের পুরোটা সময়ই বাংলাদেশকে শাসন করেছেন কিউই অধিনায়ক টম ল্যাথাম।
সঙ্গে দারুণ করেছেন উইল ইয়ং ও ডেভন কনওয়ে।
আজ রোববার দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে এক উইকেটে ৩৪৯ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে নিউজিল্যান্ড।
প্রথম দিন শেষে উইকেটে ছিলেন টম ল্যাথাম। ডাবল সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থেকে ১৮৬ রানে দিন শেষ করলেন কিউই অধিনায়ক।
তার সঙ্গে সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা ডেভন কনওয়ে ৯৯ রানে অপরাজিত ছিলেন।
দিনের আউট হওয়া একমাত্র ব্যাটার হলেন কিউই ওপেনার উইল ইয়ং। অবশ্য তিনিও ব্যাট হাতে ভালো করেছেন। হাফসেঞ্চুরি করে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি।
হ্যাগলি ওভালের সবুজ ঘাসের উইকেটে যে কোনো দলই টস জিতলে বোলিং নেয়। বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হকও তাই করেছিলেন।
গুরুত্বপূর্ণ কন্ডিশনে টস জিতে নিয়েছিলেন বোলিং। কিন্তু, শুরুর দুই সেশনে বোলিংয়ের সুবিধা মোটেই নিতে পারল না বাংলাদেশ।
উল্টো দাপট দেখিয়ে সেঞ্চুরি তুলে নেন ল্যাথাম। সঙ্গে ৫৪ রানের দারুণ ইনিংস উপহার দিয়ে ফিরেছেন ওপেনার উইল ইয়ং।
ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশ দল প্রথম সেশনে কোনো উইকেটই নিতে পারেনি। দুবার রিভিউ নিয়ে দুবারই বেঁচে গেছেন ল্যাথাম।
প্রথম সেশনে ২৫ ওভারে মোট ৯২ রান তুলেছে কিউইরা। এরপর দ্বিতীয় সেশনেও ভালো ব্যাটিং করে তারা।
প্রথম দুই সেশনের পর তৃতীয় সেশনেও দারুণ কেটেছে কিউইদের। কেবল দ্বিতীয় সেশনে একমাত্র উইকেটটি পায় বাংলাদেশ।
তবে, শুরুতে নামা ওপেনার উইল ইয়ংকে এই সেশনে বিদায় করতে পেরেছে বাংলাদেশ।
শরিফুল ইসলামের বলে মোহাম্মদ নাঈমের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ফিরেছেন তিনি। ১১৪ বল খেলে ৫ বাউন্ডারিতে ৫৪ রান করেছেন এই কিউই ওপেনার।
অথচ সমীকরণটা উল্টো হতে পারত। কারণ, এই ভেন্যুতে প্রথম দিনে ব্যাটিং করা খুব কঠিন।
আগের সাত টেস্টে প্রথম ইনিংসে অর্ধশত রানের উদ্বোধনী জুটি ছিল না একটিও।
এবার এই কঠিন কন্ডিশনে শুরুতেই ১৪৮ রানের চমৎকার ইনিংস উপহার দিয়েছেন দুই কিউই তারকা ল্যাথাম ও ইয়ং।
এটাই এই মাঠে শুরুর জুটিতে সর্বোচ্চ রানের জুটি।
এর আগে ২০১৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ল্যাথাম ও হ্যামিশ রাদারফোর্ডের ৩৭ রানই ছিল এতদিন সর্বোচ্চ জুটি।
ইয়ং ফিরলে দিনের বাকি অংশ কনওয়েকে নিয়ে পার করেন ল্যাথাম। এর মধ্যেই ক্যারিয়ারের দ্বাদশ টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি।
মাত্র ১১৩ বল খেলেই ওয়ানডে স্টাইলে শতকে পা রাখেন অধিনায়ক। শতক পেরিয়ে দিন শেষে ডাবলের কাছে চলে গেলেন ল্যাথাম।
আরেক ব্যাটার কনওয়েও এগিয়ে গেলেন ব্যক্তিগত শতকের কাছে। ঠিক ৯৯ রানের ঘরে থেকে দিন শেষ করলেন গেল ম্যাচে সেঞ্চুরি পাওয়া কনওয়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে):
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৯০ ওভারে ৩৪৯/১ (ল্যাথাম ১৮৬*, ইয়াং ৫৪, কনওয়ে ৯৯*;
তাসকিন ২২-৫-৬৮-০, শরিফুল ১৮-৬-৫০-১, ইবাদত ২১-১-১১৪-০, মিরাজ ২৫-১-৯৫-০, নাজমুল ৪-০-১৫-০)।