নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৫ জানুয়ারি, ২০২২ ৬:৪৩ : অপরাহ্ণ
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ যেন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে। কিন্তু নির্বাচন ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। আমরা অবশ্যই সন্ত্রাসমুক্ত নির্বাচন চাই।’
আজ বুধবার পঞ্চম দফার ইউপি নির্বাচনে সাভারের আশুলিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও আশুলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনের নিজ দপ্তরে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এখন ভোটযুদ্ধে যুদ্ধ আছে, ভোট নেই উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘ইউপি নির্বাচনে এখন উৎসবের বাদ্যের বদলে বিষাদের করুণ সুর বাজছে। নির্বাচনী সন্ত্রাস প্রতিহত করতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের প্রতিঘাত আরো জোরদার করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের সন্ত্রাসের কারণ অনুসন্ধান করে তা থেকে অব্যাহতির উপায় উদ্ভাবন অপরিহার্য। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন প্রথা উঠিয়ে না দিলে সন্ত্রাস ও সংঘর্ষ উত্তরোত্তর বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘স্মরণযোগ্য যে, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্ব রাতে ব্যালট পেপারের ঘটনাটি বিবিসি প্রকাশ করার পর নির্বাচন কমিশন দিনের ভোট রাতে করে বলে আমরা প্রশ্নবিদ্ধ হই। এটি কোনোভাবেই কাম্য ছিল না।’
পড়ুন: দেশে গণতন্ত্র হত্যার প্রধান নায়ক খায়রুল হক, একদিন বিচার হবে: ফখরুল
গণতন্ত্র ও মানবাধিকার একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ উল্লেখ করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘মানবাধিকারের আলোচনা এখন তুঙ্গে। মানবাধিকার উৎসারিত হয় ভোটের অধিকার থেকে। আমাদের সংবিধানের স্পিরিটই হচ্ছে তাই। জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা ও রক্ষা করা এখন সুদূরপরাহত। একমাত্র নির্ভেজাল গণতন্ত্রই মানবাধিকারের গ্যারান্টি দিতে পারে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও এর প্রতিষ্ঠানিক রূপদানের জন্য অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ আইনানুগ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘নির্বাচনি আইন ভঙ্গ করে আচরণবিধি লঙ্ঘন সুষ্ঠু নির্বাচনের গোড়া কর্তনের নামান্তর। কতিপয় মাননীয় সংসদ সদস্যরা সরাসরি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কলুষিত করেছেন। কেবল চিঠি দেওয়া ছাড়া তাদের সম্পর্কে আর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। কেউ কেউ সেই চিঠি উপেক্ষা করেছেন। এজন্য আইনের কঠোর প্রয়োগ অনিবার্য ছিল। কিন্তু নির্বাচন প্রক্রিয়া সংস্কার না করা হলে তাদের সম্পর্কে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ সম্ভব নয়। অন্য যারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে তাদের সামান্য অর্থদণ্ড প্রদান ব্যতীত অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা ছাড়া আইনের কঠোর বাস্তবায়ন অসম্ভব।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচনের মৌলিক শর্ত ভোটের আগে ও পরে ব্যালট পেপারের নিরাপত্তা বিধান। আমরা যথাযথভাবে তা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এর দায় এড়াতে পারবে বলে মনে হয় না।’
