নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ২:৪৫ : অপরাহ্ণ
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) গুরুতর অসুস্থ। তার রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এভাবে রক্তক্ষরণ চলতে থাকলে তিনি বেশি দিন বাঁচবেন না। তার যে রোগ হয়েছে আপনারা শুনেছেন—লিভার সিরোসিস। এ রোগ মারাত্মক রোগ। এ রোগের চিকিৎসা আমাদের দেশে সেভাবে নেই। কেবল আমেরিকা, ইংল্যান্ড ও জার্মানিতে এ রোগের চিকিৎসা ভালো হয়।’
আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কৃষক দল আয়োজিত এক মানববন্ধনে তিনি এ কথা বলেন।
একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে আজ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে অত্যন্ত সচেতনভাবে হত্যা করা হচ্ছে-এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা খালেদা জিয়ার নাগরিক অধিকার। সব রাজনৈতিক দল খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া কথা বলছে, তারপরেও সরকার অনুমতি দিচ্ছে না। পৃথিবীর সব দেশ এটা জানে। আমাদের দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন সংগঠন, বুদ্ধিজীবী সবাই বলেছেন যে, দেশনেত্রীকে বাইরে চিকিৎসার করার সুযোগ দিন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘খালেদা জিয়া আর গণতন্ত্র অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাদের আলাদা করা যায় না। খালেদা জিয়ার মতো মানুষকে যদি বিদেশে না পাঠায়, আর আমরা যদি গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে না পারি, তাহলে এ দেশের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে, বিলুপ্ত হয়ে যাবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজ বাংলাদেশের বড় দুঃসময়। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যদি চিকিৎসা বাংলাদেশে না হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ তো চিকিৎসা পায়ই না। হাসপাতালে যাবেন-দেখবেন কোনো চিকিৎসা নেই।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই—আজ এসব করে কোনো লাভ হবে না। জনগণ জেগে উঠতে শুরু করেছে এবং জেগে উঠবে, টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত পদ্মা-মেঘনা-যমুনার অববাহিকায় উত্তাল তরঙ্গ সৃষ্টি হবে এবং তোমাদের তখতে তাউস ভেঙে ছারখার হয়ে যাবে।’
নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একবার ভাবুন, আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেব আট হাজার মাইল দূরে আছেন। তার মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া প্রতি মুহূর্তে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন, যুদ্ধ করছেন—এমন একটা অবস্থার মধ্যে আমাদের দায়িত্ব অনেক বেশি, আমাদের দায়িত্বই হচ্ছে প্রধান।’
কুমিল্লায় কমিশনার হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন জনকে ক্রসফায়ারে দেওয়ার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের পর তাদের ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়। কেন এ হত্যাকাণ্ড? কারণ, এ হত্যার মূলহোতা কে, এটা যেন জানা না যায়। পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পর যদি হত্যা করা হয়, তাহলে রাষ্ট্রে কি নিরাপত্তা থাকে?’
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সাবেক সাংসদ ফজলুল হক মিলন, মোশাররফ হোসেন, যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদল সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাবির তুহিন, এবং সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবলু প্রমুখ।
আরও পড়ুন: কুয়েট ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ