শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা বিএনপি

খালেদা জিয়ার রক্তক্ষরণ হচ্ছে, বিদেশে নেওয়া জরুরি: মির্জা ফখরুল



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৭ নভেম্বর, ২০২১ ৪:০৫ : অপরাহ্ণ

রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণ হচ্ছে জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ ডাক্তাররা গত কয়েকদিন ধরে চেষ্টা করেও তার রক্তক্ষরণের কারণ বের করতে পারছেন না। কারণ, সেই ধরনের কোনো প্রযুক্তি দেশে নেই। এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে দ্রুত বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করানো অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’

আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) এবং নব্বই দশকের সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের বিএনপিপন্থী ছাত্রনেতারা এ সভার আয়োজন করে।

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা অনেকে অনেক কথা বলেছেন উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারা বিদ্রূপ করতেও দ্বিধা করেন না-এরা এতো অমানুষ। তাদের ন্যূনতম রাজনৈতিক শিষ্টাচার তো নেই, তাদের মানবিক বোধ তো নেই। আর নিজের সম্পর্কে তাদের এত বেশি দাম্ভিকতা যে, তারা যেকোনো ব্যক্তি সম্পর্কে, বিশেষ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সম্পর্কে ‘অশোভন’ মন্তব্য করতে এতটুকু দ্বিধা করেন না।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) একবারও মনে করেন না যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হচ্ছেন সেই মহিয়সী নারী যিনি ১৯৭১ সালে তার স্বামী যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, তখন তার শিশুপুত্রকে হাতে ধরে পালিয়ে ঢাকায় এসেছিলেন এবং সেখানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে ক্যান্টনমেন্টের কারাগারে ছিলেন। অর্থাৎ দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।’

স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে খালেদা জিয়ার ভূমিকা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের প্রতীক; স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক।’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সব শ্রেণির মানুষকে, সব পেশার মানুষকে, সমস্ত রাজনৈতিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। কারণ আমি আগেই বলেছি, স্বৈরাচার আর ফ্যাসিবাদ এক নয়। এই ফ্যাসিবাদ আরও ভয়ংকর। ইতিমধ্যে আমাদের সকল অর্জন তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।’

গত ১৩ নভেম্বর বিকেলে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হওয়ায় পরের দিন ভোরে তাকে করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছে তার

চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে।

তবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়ার করা আবেদনটি ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী আগেই নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ায় তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়ার আইনি কোনো সুযোগ নেই।

আইনমন্ত্রীর মতে, আইন অনুযায়ী বিদেশ যেতে চাইলে খালেদাকে ফের জেলে গিয়ে আবেদন করতে হবে।

২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর প্রথমে পুরান ঢাকার বিশেষ কারাগার ও পরে কারাবন্দি অবস্থায় বিএসএমইউ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।

দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার নির্বাহী আদেশে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ ছয় মাসের জন্য তার সাজা স্থগিত করে মুক্তি দেয়। এরপর আরও তিন দফায় তার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ায় সরকার।

আরও পড়ুন:

শারীরিক অবস্থার অবনতি, রওশন এরশাদ আবার আইসিইউতে

কারাগারে খালেদা জিয়াকে ‘স্লো পয়জনিং’ করা হয়েছিল কি না, প্রশ্ন ফখরুলের

বিএনপি নেতারা খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে ‘স্লো পয়জনিং’ করছেন কি না, প্রশ্ন কাদেরের

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর