নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৩ নভেম্বর, ২০২১ ৪:১৩ : অপরাহ্ণ
ছাত্রলীগের সংঘাতের ঘটনায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ৩০ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
আজ মঙ্গলবার কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল সভায় তাদের বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার।
এছাড়া সভায় আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ খোলার সিদ্ধান্তও হয়।
জানা গেছে, পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৩০ শিক্ষার্থীর মধ্যে আটজনকে দুই বছর, দুজনকে দেড় বছর এবং ২০ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
কলেজের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
তারা বলছেন, গত ৩০ অক্টোবর মাহাদি জে আকিবের ওপর হামলার ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় দায়েরকৃত মামলায় ১৬ জন আসামির মধ্যে মাত্র চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল ব্যবস্থা নিয়েছে। অথচ ১৬ জন সবাই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে।
এছাড়া অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল গত দুই বছর ধরে সংঘাতের ঘটনায় ৩০ শিক্ষার্থীকে বহিস্কার করেছে। অথচ দুই বছর আগে ডা. সাহেনা আক্তার কলেজ অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন না। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার রাখে না।
তবে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এ সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাত্রলীগের অপর পক্ষের নেতা-কর্মীরা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার রাজনীতি সংবাদকে বলেন, সভায় অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যরা বলেছেন, সংঘাতের ঘটনা গত দুই বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। তাই আগের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে তারা দাবি তুলেন। তখন আগের তদন্ত কমিটির রিপোর্টে যেসব শিক্ষার্থীদের অভিযুক্ত করা হয় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
গতত ২৯ অক্টোবর রাতে ও ৩০ অক্টোবর সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল এবং নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের মধ্যে দুই দফা সংঘর্ষ হয়।
৩০ অক্টোবর সকালের সংঘর্ষে আহত হন মাহাদি জে আকিব, মাহফুজুল হক ও নাইমুল ইসলাম।
তাদের মধ্যে আকিব নওফেলের অনুসারী আর বাকি দুজন নাছির উদ্দীনের।
সংঘর্ষের জেরে ৩০ অক্টোবর বিকেলে ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
ওই দিন সন্ধ্যাতেই শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য সাত কার্যদিবস সময় দেয়া হয়। এরপর সময় আরও ১০ দিন বাড়িয়ে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। আজ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।
সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় একটি ও চকবাজার থানায় পাল্টাপাল্টি দুটি মামলা হয়। পাঁচলাইশ থানার মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।