বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৮ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা খেলা

জেতার আশা জাগিয়েও পাকিস্তানের কাছে হারলো বাংলাদেশ



নিজস্ব ক্রীড়া প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১৯ নভেম্বর, ২০২১ ৬:০৯ : অপরাহ্ণ

‘পাকিস্তান আনপ্রেডিক্টেবল টিম। মিরপুরের উইকেট আনপ্রেডিক্টেবল।’- বাক্য দুটো উইকেটের পেছন থেকে বেশ ক’বার বললেন নুরুল হাসান।

বাংলাদেশও যে অনিশ্চিত দল সেটা বোধ হয় মনে মনে বলেছিলেন তিনি।

বোলিংয়ের শুরুতে যেভাবে জ্বলে উঠেছিল বাংলাদেশ, শেষ পর্যন্ত তা ধরে রাখতে পারলো না।

মুস্তাফিজুর রহমান নিজের শেষ ওভারে দিলেন ১৫। একই পথে হেঁটে ইনিংসের ১৯তম ওভারে শরিফুল ইসলামও দিলেন সমান রান। শেষ ওভারে প্রয়োজন হওয়া ২ রান ছক্কা হাঁকিয়েই নিয়ে নিলেন শাদাব খান।

জেতার আশা জাগিয়েও বাংলাদেশ হারলো আরেকটি ম্যাচ।

আজ শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৪ উইকেটে জিতে নিল পাকিস্তান। সেই সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেলেন বাবর আজমরা।

টস জিতে আগে ব্যাট করে ২০ ওভারে সাত উইকেট হারিয়ে ১২৭ রান তুলে বাংলাদেশ। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৯.২ ওভারে ৬ উইকেটে ১৩২ রান করে পাকিস্তান।

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। টিকতে পারেননি পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই পাকিস্তানি ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। ১১ বলে ১১ রান করে বিদায় নিয়েছেন পাকিস্তানের তারকা ব্যাটসম্যান।

মুস্তাফিজের পরের ওভারেই আরেক পাকিস্তানি ওপেনারকে ফেরান তাসকিন আহমেদ। তিনিও বাবর আজমকে বোল্ড করেন। সদ্য শেষ হওয়া বিশ্বকাপে দারুণ ছন্দে থাকা বাবর-রিজওয়ান দুজনেই আজ ব্যর্থ হলেন।

দুই ওপেনারকে হারানোর পর ব্যর্থ হন হায়দার আলীও। উইকেটে গিয়ে রানের খাতাও খুলতে পারেননি তিনি। মেহেদী হাসানের বলে এলবির শিকার হন তিনি।

বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ

দলীয় ১৬ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারিয়ে ফেলে পাকিস্তান।

সতীর্থদের আশা-যাওয়ার মাঝেই রানআউট হন শোয়েব মালিক। পাওয়ার প্লেতে ৪ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ২৪ রান তোলে সফরকারীরা।

পাকিস্তান দ্রুত ৪ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের দখলেই ছিল ম্যাচ।

কিন্তু উইকেটে থাকা ফখর জামান সেটা হতে দেননি। পঞ্চম উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন তিনি। পাকিস্তানের সমীকরণ সহজ করে দিয়ে ১৫তম ওভারে ফেরেন তিনি।

৩৪ রান করে ফখর ফেরার পর আশা জাগে বাংলাদেশের। কিন্তু শেষ দিকে বাংলাদেশের আশা ভেস্তে দিয়ে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান।

বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা হয়েছিল হতাশা দিয়ে। এক পর্যায়ে মনে হয়েছিল ১০০ করতেও পারবে না বাংলাদেশ। কিন্তু আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসানের ব্যাটে শেষ পর্যন্ত শতক ছাড়ানো একটা ইনিংস গড়ে স্বাগতিকরা।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমকে (১) সাজঘরে ফেরান পেসার হাসান আলী।

নাঈমের পর হতাশ করেন আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা আরেক ওপেনার সাইফ হাসান।

১ রান করা সাইফের ব্যাটিংও ছিল অস্বস্তিদায়ক। টি-টোয়েন্টিতে ১ রান তুলতে সাইফ খেলেন ৮ বল।

দ্রুত দুই উইকেট হারানোর পর হাল ধরতে পারেননি নাজমুল শান্তও। লম্বা সময় পর টি-টোয়েন্টিতে ফেরা শান্ত খেললেন মাত্র ৭ রানের ইনিংস। মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলেই জায়গা করে নিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।

পাওয়ার প্লেতে শুধু হতাশাই দেখে বাংলাদেশ। প্রথম ছয় ওভারে বাংলাদেশ তোলে মাত্র ২৫ রান, হারায় ৩টি উইকেট।

বিপদের সময় দাঁড়াতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও।

মোহাম্মদ নওয়াজের ডেলিভারিতে বোল্ড হন মাহমুদউল্লাহ। ১১ বলে ৬ রান করেন মাহমুদউল্লাহ।

বাংলাদেশ অধিনায়ক দুর্ভাগ্যজনকভাবে বোল্ড হন মোহাম্মদ নওয়াজের বলে। বল উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের গ্লাভসে যাওয়ার সময় সামান্য স্টাম্পে লাগলে বেল পড়ে যায়। শুরুতে বুঝতে না পারলেও রিভিউ দেখে আউট দেন আম্পায়ার।

এরপর আফিফ হোসেনের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করে বাংলাদেশ। ৩৪ বলে ২ চার ও ২ ছয়ে ৩৬ রান করে তিনি শাদাব খানের বলে স্টাম্পিংয়ের শিকার হন।

উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানও চেষ্টা করেন দলের রান বাড়াতে। ২২ বলে ২ ছয়ে ২৮ রান করেন তিনি।

শেষ দিকে দলের হাল ধরেন মেহেদী হাসান। ২০ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় তিনি অপরাজিত ৩০ রান করেন।

আর শেষ বলে হ্যারিস রউফকে ছক্কা মেরে দলীয় স্কোর ১২৭ রানে নিয়ে যান তাসকিন।

পাকিস্তানের হয়ে বল হাতে ২২ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন হাসান আলী। ২৭ রান খরচায় এক উইকেট পান নেওয়াজ। ২৪ রান দিয়ে দুই উইকেট নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। শাদাব খানের শিকার একটি।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর