শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা চট্ট-মেট্টো

সবার নজর থাকবে পীর সৈয়্যদ সাবির শাহ্’র দিকে

চট্টগ্রামে লাখো ভক্তের জশনে জুলুস আজ



নিজস্ব প্রতিবেদন প্রকাশের সময় :২০ অক্টোবর, ২০২১ ১২:২০ : পূর্বাহ্ণ

১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরীতে আজ বুধবার সকালে জাঁকজমকপূর্ণভাবে লাখো ভক্তের ‘জশনে জুলুস’ (শোভাযাত্রা) বের হবে। মুরাদপুর থেকে মির্জারপুল- কাতালগঞ্জ হয়ে চকবাজার-চন্দনপুরা, আন্দরকিল্লা, চেরাগী পাহাড়, জামাল খান, কাজীর দেউড়ি, ওয়াসা, জিইসি পর্যন্ত সড়কে থাকবে জুলুসের স্রোত।

অরাজনৈতিক সংগঠন আনজুমান-এ-রহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনায় ৫০তম জশনে জুলুসের আসরে এবার নেতৃত্ব দিচ্ছেন পাকিস্তান দরবারে আলীয়া কাদেরিয়া ছিরিকোট শরীফের পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)।

নগরীর ষোলশহর বিবিরহাট আলমগীর খানকা-এ-কাদেরিয়া সৈয়দিয়া তৈয়বিয়া থেকে সকাল ৮টায় বের হবে বহু আকাঙ্খিত ঐতিহ্যবাহী ‘জশনে জুলুস’।

জুলুসকে কেন্দ্র করে নগরীর সড়কগুলোতে সকাল থেকে মানুষের ঢল নামবে। আল্লামা পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্‌ (মাদ্দাজিল্লুহুল আলী) কে একনজরে দেখার প্রতীক্ষায় থাকবেন সবাই।

শুধু মুসলিমরা নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মানুষেরাও সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্‌’কে ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে রাস্তায় নেমে আসবেন।

করোনাভাইরাসের তীব্র সংক্রমণের কারণে গত বছর ১২ রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে চট্টগ্রাম নগরীতে বর্ণাঢ্য পরিসরে জশনে জুলুস বের হয়নি। আনজুমান ট্রাস্টের কর্মকর্তারা সীমিত পরিসরে জুলুস বের করেছিলেন।

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এই জুলুসে প্রতি বছর নেতৃত্ব দিয়ে থাকেন পাকিস্তান দরবারে আলীয়া কাদেরিয়া ছিরিকোট শরীফের পীর গাউসে জামান, রাহনুমায়ে শরিয়ত ও ত্বরিকত, রাসুল (সা.) এর ৪১তম অধস্তন বংশধর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা.জি.আ)। কিন্তু তিনি অসুস্থতার কারণে এবার বাংলাদেশে আসতে পারেননি বলে জানিয়েছেন জুলুসের আয়োজকরা।

আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্’র অনুপস্থিতিতে এবার জুলুসে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তার ছোট ভাই আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ (মা.জি.আ)। তাদের পিতা আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ্ রহিমাহুল্লাহ ১৯৭৬ সালে চট্টগ্রামে জশনে জুলুসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তাঁর নেতৃত্বে শুরুতেই এই জুলুসে লাখো মানুষের ঢল নেমেছিল। পরবর্তীতে প্রতি বছরই বর্ণাঢ্য এ জুলুসে ধর্মপ্রাণ মুসলি­র সংখ্যা বাড়তে থাকে।

আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ্ রহিমাহুল্লাহ এর পিতা হলেন কুতুুুবুল আউলিয়া সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি রহিমাহুল্লাহ, যিনি একজন আধ্যাত্মিক সুফি সাধক ছিলেন।

আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তৈয়ব শাহ্’র ইন্তেকালের পর ১৯৮৭ সাল থেকে জুলুসের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন তাঁর ছেলে আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ তাহের শাহ্ (মা.জি.আ)।

আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ এর আগে ২০১৩ সালে নগরীতে জুলুসের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ৭ বছর পর আল্লামা সাবির শাহ্ আবার জুলুসে নেতৃত্ব দিতে যাচ্ছেন।

আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্ পাকিস্তানের একজন রাজনীতিবিদ। তিনি ১৯৯৭ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরীফের উপদেষ্টা ছিলেন। এছাড়া তিনি ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

চট্টগ্রামের পাশাপাশি রাজধানী ঢাকায়ও প্রতি বছর জুলুসের আয়োজন করে আনুজমানে আহমদিয়া সুন্নিয়া ট্রাস্ট।

রাজধানীতে পীর আল্লামা সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্'র নেতৃত্বে জুলুস

গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্’র নেতৃত্বে জুলুস বের হয়। নানা শ্রেণী-পেশার হাজার হাজার মানুষ এই জুলুসে অংশ নেন।

রাজধানীতে জুলুস শেষে সোমবার পীর সৈয়্যদ মুহাম্মদ সাবির শাহ্’ কে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন শিল্পগ্রুপ পিএইচপি ফ্যামেলির চেয়ারম্যান সুফি মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ও আনজুমান ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মহসিন।

এ বছর জুলুসের ৫০তম আসরে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও আগের মতো লাখ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

জুলুসের রোড ম্যাপ
১২ রবিউল আউয়াল (২০ অক্টোবর) সকাল ৮টায় চট্টগ্রামের ষোলশহর জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া আলিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন আলমগীর খানকা-এ কাদেরিয়া সৈয়্যদিয়া তৈয়্যবিয়া থেকে জুলুস শুরু হবে। এটি বিবিরহাট, মুরাদপুর, মির্জাপুল, কাতালগঞ্জ, অলিখাঁ মসজিদ, চকবাজার, প্যারেড মাঠের উত্তর-পূর্ব পাশ, চন্দনপুরা, সিরাজউদ্দৌলা সড়ক, দিদার মার্কেট, দেওয়ান বাজার, আন্দরকিল্লা, মোমিন রোড, কদম মোবারক, চেরাগি পাহাড় মোড়, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব, জামালখান, কাজীর দেউড়ি, আলমাস-ওয়াসা, জিইসি, ২ নম্বর গেইট ঘুরে পুনরায় জামেয়া আহমদিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার মাঠে ফিরবে। সেখানে মিলাদ মাহফিল, জোহর নামাজ ও দোয়া-মোনাজাত হবে।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর