শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা রাজধানী

গ্রাহকদের ২৫০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে কিউকম, মালিক গ্রেপ্তার



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :৪ অক্টোবর, ২০২১ ১:২৫ : অপরাহ্ণ

প্রতারণার অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান কিউকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের ২৫০ কোটি টাকা আটকে রেখেছে বলে জানিয়েছেন ডিবি প্রধান এ কে এম হাফিজ আক্তার।

জানা যায়, অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মতো কিউকমও চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতো। প্রতারণাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জসহ কয়েকটি ই-কমার্স সাইটের মালিকদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেপ্তারের পর সম্প্রতি অফিস বন্ধ করে দেয় কিউকম। এই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে গ্রাহকদের পণ্য সঠিক সময়ে ডেলিভারি না দেওয়াসহ টাকা আটকে রাখার অভিযোগ রয়েছে।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবি প্রধান হাফিজ আক্তার জানান, রাজধানীর পল্টন থানায় এক ভুক্তভোগী কিউকমের মালিক মো. রিপন মিয়ার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করেছেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল তাকে ডিবি মতিঝিল বিভাগ গ্রেপ্তার করে।

হাফিজ আক্তার বলেন, কিউকম প্রায় লক্ষাধিক পণ্য অনলাইনে বিক্রি করে। ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার জন্য কিউকম ‘বিজয় আওয়ার’ ‘স্বাধীনতা আওয়ার’ ‘বিগ বিলিয়ন’ নামে ২ থেকে ১৫ দিন সময় দিয়ে অনেক কম দামে মোটরসাইকেল অফার করতো। এক লাখ ৬৭ হাজার টাকার মোটরসাইকেল এক লাখ ২০ হাজার টাকায় পাওয়ার অফার পেয়ে ক্রেতারা নগদ টাকা পরিশোধের মাধ্যমে মোটরসাইকেল অর্ডার করতেন। কিন্তু সময়মতো কিউকম পণ্য সরবরাহ না করায় সব ক্রেতা হতাশ হয়ে কিউকমে যোগাযোগ করে। কিউকম লাভে টাকা ফেরত নেওয়ার অফার করলে ক্রেতারা লোভে পড়ে লাভের অংশ হতে ১০ থেকে ২০ শতাংশ কমে কিউকম হতে টাকার চেক নেন।

ডিবি প্রধান বলেন, কিউকমের মোটরসাইকেলে ছাড় দেওয়ার কারণ তার ব্র্যান্ড মার্কেটিং করা। যেহেতু মোটরসাইকেলের চাহিদা অনেক বেশি ও বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে, তাই এই পণ্যে তারা ছাড় দেয়।

দেশে সম্প্রতি একাধিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জের প্রতারণা আর অফিস বন্ধের পর এক নোটিশে নিজেদের অফিস বন্ধ ঘোষণা করে কিউকম। তারা তাদের গুলশান নিকেতনের অফিসে যেতেও নিষেধ করে দেয়।

পণ্য দেওয়ার নাম করে গ্রাহকের কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে কিউকম। কিন্তু অনেক গ্রাহককে তারা পণ্য বুঝিয়ে দেয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফলে কিউকমের সন্দেহজনক লেনদেনের বিরুদ্ধে ছায়া তদন্ত শুরু করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

জানা গেছে, ব্যবসার সুবাদে কিউকমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রিপন মিয়ার সঙ্গে পরিচয় হয় ইভ্যালির সিইও রাসেলের। মূলত রাসেলের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র ধরেই রিপন প্রতিষ্ঠা করেন কিউকম। ধামাকা অফার দিয়ে তিনি শুরু করেন অনলাইন ব্যবসা।

কিউকমে টেলিভিশন, ফ্রিজ ও মোটরসাইকেলের অফার দিতো। কম মূল্যের কারণে এ প্রতিষ্ঠানে লোকজন হুমড়ি খেয়ে পড়তেন। পণ্যের মূল দামের সঙ্গে প্রায় ৭৫ ভাগ ছাড়ের ঘোষণা থাকতো।

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর