সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ, ১৪৩১ | ১৯ শাওয়াল, ১৪৪৫

মূলপাতা জাতীয়

বিজ্ঞাপনমুক্ত নয়, তাই দেশজুড়ে বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ


নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১ অক্টোবর, ২০২১ ১:৩০ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

বিদেশি চ্যানেলগুলো তাদের মূল কনটেন্টের সঙ্গে কোনো বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে না- সরকারের পক্ষ থেকে এমন নির্দেশনা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে বিদেশি সব টেলিভিশন চ্যানেল সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যেসব বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপনসহ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়, সেগুলো বাংলাদেশে দেখানো যাবে না।

গত ২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে কেবল অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন, অ্যাটকো, বিদেশি চ্যানেল ডিস্ট্রিবিউটর, আকাশ ডিটিএইচ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠক শেষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এই তথ্য জানিয়েছেন।

কেবল অপারেটররা বলছেন, বিজ্ঞাপন প্রচার ছাড়া বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার সম্ভব নয়। এ কারণে তারা গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলো দেখানোই বাদ দিয়ে দিয়েছেন।

কেবল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এস এম আনোয়ার পারভেজ বলেন, অনেকে মনে করছেন, কেবল অপারেটররা বুঝি কোনো কারণে বিদেশি চ্যানেলগুলোর সম্প্রচার বন্ধ রেখেছেন। কিন্তু বিষয়টি হলো, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিজ্ঞাপনসহ অনুষ্ঠান প্রচার করে-এমন বিদেশি চ্যানেল বাংলাদেশে দেখানো যাব না। তাই তা তারা দেখানো বন্ধ রেখেছেন।

আনোয়ার পারভেজ জানান, সরকার পরবর্তী সময়ে নতুন কোনো নির্দেশনা দিলে বা পদক্ষেপ নিলে, তারা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।

গতকাল রাত থেকে বিদেশি চ্যানেলগুলো দেখতে গেলে টেলিভিশনের পর্দাজুড়ে একটি বার্তা দেখা যাচ্ছে। সেখানে লেখা- গ্রাহকদের সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক ১ অক্টোবর থেকে বিদেশি বিজ্ঞাপনবিহীন চ্যানেল সম্প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় পরবর্তী নির্দেশনা না পাওয়া পর্যন্ত বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচার করা থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হচ্ছি।

বিভিন্ন এলাকায় কেবল অপারেটররা নিজেদের মতো করে এই একই বার্তা দিচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সচিবালয়ে সভাকক্ষে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জানান, আইন অনুযায়ী দেশে বিদেশি চ্যানেলগুলোর বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিন ফিড) সম্প্রচার বাস্তবায়নে শুক্রবার (১ অক্টোবর) থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ১ অক্টোবর থেকে আমরা সারাদেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবো। কোনো বিদেশি চ্যানেলে ক্লিন ফিড দেখানো না হলে এবং মন্ত্রণালয়, টেলিভিশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও ক্যাবল অপারেটর ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের মাধ্যমে ক্যাবল লাইনে সম্প্রচারের জন্য টেলিভিশনগুলোর নির্ধারিত ক্রমের ব্যত্যয় হলে বা কোনো ক্যাবল অপারেটর আইন ভঙ্গ করে নিজেরা বিজ্ঞাপন, অনুষ্ঠান প্রদর্শন করলে আগামীকাল থেকে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মূলত বাংলাদেশের আইনে বিদেশি টেলিভিশনগুলোর বাংলাদেশে সম্প্রচারের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বিজ্ঞাপন প্রচারের সুযোগ নেই। এ কারণে আগেও কয়েক দফায় বিদেশি চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন প্রচারের সুযোগ বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার।

এ দফায় নতুন করে আবার একই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর কারণ হিসেবে আইনের পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব হারানোর বিষয়টিও বড় করেই এখন চিন্তা করা হচ্ছে। বিদেশি চ্যানেলে প্রচারিত বিজ্ঞাপনগুলো থেকে একদিকে সরকার কোনো রাজস্ব পায় না, আবার ওই সব চ্যানেল বাংলাদেশে জনপ্রিয় হওয়ায় অনেক মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের পণ্যের প্রচারের জন্য বিদেশি চ্যানেলকেই বেছে নিয়েছে।

অবশ্য এসবের পরও বিদেশি কিছু চ্যানেল বিশেষ করে ভারতীয় কিছু চ্যানেল বাংলাদেশে এতো বেশি জনপ্রিয় যে সেগুলো বন্ধ করা কতটা সম্ভব হবে তা নিয়েও প্রশ্ন আছে।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর