বিএনপি ‘ষড়যন্ত্র বৈঠক’ করছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের হুংকার দিয়ে বলেছেন, ‘একটি কথা মনে রাখবেন, এবার যদি কোনো ধরনের সহিংসতার আশ্রয় নেন, শেখ হাসিনার উন্নয়ন-অগ্রগতি নষ্ট করতে চান, তাহলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।’
আজ রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘মানবতার আলোকবর্তিতা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা’-শীর্ষক এই সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ সিরিজ বৈঠক করছেন, সিরিজ বৈঠক তো নয়, ষড়যন্ত্র বৈঠক। আবারও জ্বালাও-পোড়াও করার ইচ্ছা বোধ হয় আপনাদের আছে। সেই দূরভিসন্ধি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।’
বিএনপিকে হুঁশিয়ার করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘এবার যদি দেশে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন, শেখ হাসিনার এই অর্জন, অনন্য সাফল্য নষ্ট করতে চান, তাহলে জনগণকে সঙ্গে দিয়ে তার দাঁত ভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত।’
‘প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সফরে কোনো অর্জন নেই’-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আজ অবাক লাগে, মির্জা ফখরুল বলেন যে, এই সফরে কোনো অর্জন নেই। ফখরুল সাহেব দুনিয়ার কোনো খবর রাখেন না। জাতিসংঘের অধিবেশনে প্রত্যেকটি ফোরামের বক্তব্য, মূল অধিবেশনে শেখ হাসিনার বক্তব্য সারা বিশ্বে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের সুনাম-মর্যাদাকে শেখ হাসিনা নতুন মাত্রায় উন্নীত করেছেন।’
মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন, টিকা বৈষম্য নিয়ে কথা বলেছেন, সারা দুনিয়া আজ মুগ্ধ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবার জন্য টিকায় সমান সুযোগ থাকতে হবে। এটি কি আপনি শোনেননি? নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকাটি পড়েননি? আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এবং বহুল প্রচারিত পত্রিকাটি মন্তব্য করেছে।’
মির্জা ফখরুলকে নিউইয়র্ক টাইমসের ওই প্রতিবেদন পড়ার পরামর্শ দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘‘নিউইয়র্ক টাইমস আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে বলেছে, ‘দরিদ্রতার ব্যাপারে কী করবেন? বাংলাদেশের দিকে তাকান, শেখ হাসিনার দিকে তাকান। দারিদ্র বিমোচন কীভাবে করতে হয়, শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন।’’
রোহিঙ্গা ইস্যু প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সরকার কিছু বলেনি। রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের নিজেদের সংকট আছে, এর ভেতরেও এতোদিন ধরে আমরা ১১ লাখ মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের জায়গা-আশ্রয়-খাবার দিচ্ছি। এই সমস্যা সমাধানে বিশ্বের বড় দেশগুলো আমাদের জন্য কিছুই করেনি। সাহস করে বঙ্গবন্ধুকন্যা এই সত্য উত্থাপন করেছেন।’
বিএনপিকে উদ্দেশ করে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘের এই সফরে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আরও একধাপ উঁচুতে নিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এবারের জাতিসংঘে ভূমিকা, তার সাহসিকতা, মানবিকতা ও দূরদর্শিতার যে প্রশংসা হয়েছে, এর ফলে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়েছে। আর আপনারা সমালোচনা ও বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আরও একধাপ নিচে নেমে গেছেন।’
মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সমস্যা জিইয়ে রেখে সরকার আন্তর্জাতিক সুবিধা নিতে চায়: ফখরুল
