রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ১২:১৫ : অপরাহ্ণ
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে অপপ্রচার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমি শুনলাম, কেউ কেউ নাকি বলেছে, আমরা নাকি কত বস্তা না কত ট্রাংক (বাক্স) বৈদেশিক মুদ্রা নিয়েই নাকি বিমানে এসেছি। যারা এই কথাগুলো বলেছে, তারা যখন এই বিষয়টা জানে, তো সেই ট্রাঙ্কগুলো গেলো কোথায়, রাখলাম কোথায়, কী হলো? সেই খোঁজটা তারা একটু দিক।’
শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় নিউইয়র্কে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
হোটেল লোটে নিউইয়র্ক প্যালেসের ভার্চুয়াল সভাকক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।
নিউইয়র্ক সফরের পঞ্চম দিনে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া এই নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যপ্রান্তে হোটেল ম্যারিয়টে থেকে যুক্ত হন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতারা।
মিশিগান, টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, সানফ্রান্সিসকো, ওয়াশিংটন ডিসি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ছাড়াও বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকেও অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন প্রবাসী আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে দেড়শ সুটকেস নিয়ে সৌদি আরব চলে গিয়েছিল এবং সেখানে লকার ভাড়া করে নাকি অনেক জিনিস রেখে এসেছিল শোনা যায়। তখন সেটা প্রচার হয়েছিল। আর খালেদা জিয়ার মন্ত্রী বাবর (লুৎফুজ্জামান বাবর) যখন এখানে আসে, এয়াপোর্টে ধরা পড়েছিল কয়েক লক্ষ ডলার নিয়ে। পরে অ্যাম্বাসি থেকে লোক গিয়ে কোনোমতে মুচলেকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের এই সমস্ত বদ অভ্যাস তারা সবাইকে, মানে নিজে চোর, সবাইকে ওই রকমই মনে করে। এটা হল তাদের চরিত্র। এই ধরনের কথা তারা ছড়ায়, মনে করে যে এটা বোধহয় খুব প্রচার করতে পারবে। সমালোচনাকারীরা একটা কথা ভুলে যায় যে আমি জাতির পিতার মেয়ে। আমরা দেশের জন্য কাজ করি, আর ক্ষমতাটা আমাদের কাছে দেশসেবা করা, মানুষের সেবা করা। আমরা অর্থ সম্পদের জন্য লালায়িত না।’
করোনাভাইরাস মহামারীকালে যুক্তরাষ্ট্র সফরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চার্টার ফ্লাইট ব্যবহার করার বিষয়েও অনুষ্ঠানে ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ড্রিমলাইনার, সেটা নিয়েই আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। কেন এসেছি? দুটো কারণ। একটা হচ্ছে যে, আমি যদি এই করোনার সময় অন্য এয়ারলাইন্সের টিকেট করি, তাহলে তাদেরকে টাকা দিতে হয়। আর আপনারা জানেন আন্তর্জাতিক রুটগুলো করোনার কারণে বন্ধ ছিল। আমাদের বিমানগুলো বসেই ছিল। আর একটা বিমান বসে থাকলে তার রক্ষণাবেক্ষণে একটা বিরাট টাকা খরচ হয়। সেজন্যই আমি বললাম, আমরা অন্য এয়ারলাইন্সকে টাকা না দিয়ে আমাদের বিমান নিয়ে আসব। কারণ ওরা তো দেশে বসে আছে। কাজেই আমাদের সাথে আসলো আর ঘরের টাকা ঘরেই থাকল, বিমানই পেলো।’
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে নিউইয়র্কে বিমানের ফ্লাইট পুনরায় চালুর কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য যে নিউ ইয়র্কে অন্তত আমাদের নিজেদের বিমান আসবে। সেটাও আমরা আনতে চাই। জেএফকে (জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর) তে ল্যান্ডিং করার প্র্যাকটিসটাও হয়ে গেল। ভবিষ্যতে তো আসব। কাজেই তার প্র্যাকটিসটা এখানে থেকেই করে গেলাম।’
বিএনপি-জামায়াতের টাকায় দেশের বিরুদ্ধে বিদেশের মাটিতে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি আর তাদের চোরা টাকা, ওই টাকার ভাগ খেয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বদনাম করে কোনো লাভ হবে না। কারণ আমরা জনগণের জন্য কাজ করি। জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তাদের সন্তানরা ক্ষমতাটাকে ভোগের জায়গা বানিয়েছে। ক্ষমতাটাকে তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ার জায়গা বানিয়েছে। আর আমাদের কাছে ক্ষমতা হচ্ছে মানুষের ভাগ্য গড়া, বাঙালির ভাগ্য গড়া, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়া। দেশের মানুষের উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে সরকার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায় তারা দেশের স্বাধীনতা, উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। স্বাধীনতাবিরোধীরা দেশের উন্নয়ন চোখে দেখতে পাচ্ছে না। এরা বাংলাদেশের সর্বনাশে বিশ্বাস করে। এরা বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। এরা বাংলাদেশের সর্বনাশে বিশ্বাস করে। দেশের মানুষের শত্রু এরা।’