নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৯ আগস্ট, ২০২১ ৪:৩০ : অপরাহ্ণ
জাতির পিতা বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড করতে চেয়েছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘১৯৭৫-এ বঙ্গবন্ধুর সব স্বপ্নই থেমে যায়। জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পরে ২১ বছর দেশে কোনো উন্নয়ন হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়া, এরশাদ ও খালেদা জিয়া জনগণের উন্নয়নে বিশ্বাস করে না। তারা জনগণের উন্নয়নের বিশ্বাস করলে, আমাদের যে উন্নয়ন করতে ১২ বছর লাগে, তারা ২১ বছরেও সে উন্নয়ন করতে পারেনি কেন?’
আজ রোববার কক্সবাজার বিমানবন্দর সম্প্রসারণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়ন হয়।’
জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এর মধ্যেই অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীরা। জাতির পিতা বেঁচে থাকলে ৪০ বছর আগে দেশ সমৃদ্ধ হয়ে যেতো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজার হবে বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ও দৃষ্টিনন্দন সৈকত, পর্যটনকেন্দ্র ও অত্যন্ত আধুনিক শহর। কক্সবাজারকে ঘিরে সরকারের আলাদা পরিকল্পনা রয়েছে। সিঙ্গাপুর-ব্যাংককের আদলে সাজানো হবে কক্সবাজারকে। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বালুকাময় সৈকতে বিদেশি পর্যটকদের জন্য স্পেশাল জোন করা হবে। যেখানে শুধু বিদেশিরা আসতে ও যেতে পারবেন। তারা যেন তাদের মতো করে সবকিছু উপভোগ করতে পারেন, সে ব্যবস্থা করে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু জেলখানায় বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছেন। জেলের বাইরে থাকলে শীতকালে আমাদের কক্সবাজার নিয়ে যেতেন। এমনকি আমরা উখিয়ায় গেছি। বাঘের গর্জন শোনা যেত। এত ঘন জঙ্গল ছিল তখন, সেই জঙ্গলের চিহ্নমাত্র এখন আর নেই। কক্সবাজারে এখন যেখানে ঝাউবন- এটি বঙ্গবন্ধুর করা। ৮০ মাইল লম্বা সিবিচ আর কোথাও নেই। কক্সবাজার নিয়ে তার অনেক স্বপ্ন ছিল।’
অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ-এর (সিএএবি) চেয়ারম্যান এবং ঊর্ধ্বর্তন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সমুদ্র তীরবর্তী জমি পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে বিমানবন্দরের রানওয়ে সম্প্রসারণ করে সরকার বিমানবন্দরটির আরও উন্নয়ন ঘটানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যাতে আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন কোম্পানিগুলো তাদের বড় বড় ফ্লাইটও এই বিমানবন্দরে অবতরণ করাতে পারে।
প্রকল্পটি সম্পন্ন হলে নতুন ১০ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে হবে, যার ফলে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের বোইং ৭৭৭ ও ৭৪-এর মতো বড় আকারের ফ্লাইটগুলো এই বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবে এবং এর ফলে এখানে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করার পথ সুগম হবে।
এক হাজার ৫৬৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকার এই প্রকল্প ২০২৪ সালের মে মাসে সম্পন্ন হবে।