রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৭ আগস্ট, ২০২১ ১০:১৫ : পূর্বাহ্ণ
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে দুটি আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ১০৩ জনে দাঁড়িয়েছে।
আজ শুক্রবার সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধে সাড়ে ৬টার দিকে কাবুল বিমানবন্দরে পরপর দুটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটে। প্রথম বিস্ফোরণটি হয় অ্যাবেই গেটের কাছে। যেখানে মার্কিন ও ব্রিটিশ বাহিনী বিমানবন্দরের দায়িত্বে ছিল। হামলার পর গোলাগুলির ঘটনাও ঘটে।
এর কিছুক্ষণ পরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণ ঘটে ব্যারন হোটেলের পাশে। যেখানে ব্রিটিশ কর্মকর্তারা যুক্তরাজ্যে ভ্রমণ প্রত্যাশী আফগানদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছিল।
বিবিসির সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ জনই বেসামরিক আফগান নাগরিক ও ১৩ জন মার্কিন সেনা রয়েছেন।
এছাড়া এ হামলায় অন্তত ১৫৯ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ১৮ জন মার্কিন সেনা ও চাকরিজীবী রয়েছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করে এক টেলিগ্রাম বার্তায় এটি ‘আত্মঘাতী হামলা’ ছিল বলে উল্লেখ করেছে।
এর আগে তালেবানও এক বিবৃতি দিয়ে দাবি করে, এই হামলা আইএসেরই কাজ।
আফগান সাংবাদিক বিলাল সারওয়ারি এক টুইটে বলেছেন, বিমানবন্দরের অ্যাবেই গেটের বাইরে কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য একটি পয়ঃনিষ্কাশন খালের পাশে নারী শিশুসহ অনেক আফগান অপেক্ষা করছিলেন। সেখানেই ভিড়ের মধ্যে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক হামলাকারী নিজেকে উড়িয়ে দেয়। বিস্ফোরণের পর আরেক হামলাকারী গুলিবর্ষণ শুরু করে।
বিমানবন্দরের অ্যাবে গেটের পাশে যে বিস্ফোরণ হয়, সে সময় সেখানে অন্ততত চার থেকে পাঁচশ মানুষ ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বিস্ফোরণের পরে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, রাস্তায় মৃতদেহের স্তূপ, বিমানবন্দরের বাইরে অসংখ্য দেহ ভাসছে।
১৫ আগস্ট কাবুল দখলের পর আফগানিস্তানের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ক্ষমতায় আসার পর দেশটি থেকে নিজেদের নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করে পশ্চিমাসহ বিভিন্ন দেশ।
কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উদ্ধার কাজ করছিল যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী। মিত্র দেশগুলোর সময় বাড়ানোর চাপ থাকলেও ৩১ আগস্টের মধ্যে উদ্ধার কাজ শেষ করার ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
গত কয়েক দিন ধরে পেন্টাগন বলে আসছিলো, যে কোনও মুহূর্তে কাবুল বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে। সে জন্য আফগান ও নিজেদের নাগরিকদের সতর্কও করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালেও বিমানবন্দরে হামলা হতে পারে বলে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া। তাদের নাগরিকদের বিমানবন্দরে না আসার অনুরোধও করে। শেষ পর্যন্ত সে আশঙ্কা সত্যি প্রমাণ করে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো কাবুল বিমানবন্দর।