প্রতিনিধি, রংপুর প্রকাশের সময় :২৫ আগস্ট, ২০২১ ৪:০১ : অপরাহ্ণ
রংপুর থেকে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলায় গিয়ে এক বাড়ী থেকে মা ও ছেলেকে অপহরণ ও ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) তিন সদস্যকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে দিনাজপুর সদর উপজেলার বাঁশেরহাট এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটক তিন সদস্যই রংপুর সিআইডির সদস্য।
এরা হলেন-রংপুর সিআইডির এএসপি মো. সারোয়ার কবির, এএসআই মো. হাসিনুর রহমান ও কনস্টেবল আহসানুল হক।
ওই মা-ছেলে হলেন চিরিরবন্দর উপজেলার নান্দেডাই গ্রামের সলেমান শাহ পাড়ার লুৎফর রহমানের স্ত্রী জহরা বেগম ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম।
দিনাজপুর ও রংপুরের পুলিশ প্রশাসন সূত্রগুলো জানিয়েছে, চিরিরবন্দর উপজেলা সদরের সোলেমান শাহপাড়ায় গত সোমবার রাত ৯টার দিকে আট-নয় জন লোক একটি মাইক্রোবাস নিয়ে সেখানে যায়। তাদের সাথে ২-৩টি মোটরসাইকেলও ছিলো। কালো রংয়ের ওই মাইক্রোবাস থেকে নেমে তারা জহুরা বেগমের বাড়িতে ঢুকে জহুরা বেগম ও তার ছেলে জাহাঙ্গীরকে নাটকীয় কায়দায় অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ সময় বাড়িতে থাকা একটি মোটরসাইকেলও তারা নিয়ে যায়।
পরে অপহরণকারীরা মোবাইলে ওই নারীর স্বামী লুৎফর রহমান ও দেবর রমজান আলীর কাছে ফোন করে তাদের মুক্তির জন্য ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এ নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার দিনভর অপহরণকারীদের সাথে তাদের আলোচনা চলে এবং এর মধ্যে ঘটনা সম্পর্কে স্থানীয় পুলিশও অবহিত হয়।
পরে আট লাখ টাকা মুক্তিপণ রফা হলে অপহরণকারীদের টাকা নিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাঁশেরহাট হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আসতে বলা হয়। মুক্তিপণের টাকা দিতে যান লুৎফর রহমান ও রমজান আলী। সাদা পোশাকে তাদের সঙ্গে ছিলেন জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা বুঝতে পারে সাদা পোশাকে পুলিশ রয়েছে, ফলে তারা মাইক্রোবাস নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশ তাদের তাড়া করে ১০ মাইল নামক জায়গায় গিয়ে ধরে ফেলে। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশকে সহযোগিতা করেন।
সিআইডির তিন সদস্যকে দিনাজপুর ডিবি কার্যালয়ে রাখা হয়েছে।
এ ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালককেও আটক করা হয়েছে। তার পরিচয় জানা যায়নি। ব্যবহৃত মাইক্রবাসটিও জব্দ করা হয়েছে।
অপহরণের শিকার হওয়া মা জহুরা বেগম ও ছেলে জাহাঙ্গীরকেও ডিবি অফিসে জিজ্ঞাবাদের জন্য রাখা হয়েছে।
আটক চার জনের বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা হবে বলে জানান চিরিরবন্দর থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার।