রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৫ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা জাতীয়

কত বড় নৃশংসতা এরা করতে পারে: প্রধানমন্ত্রী


বাসস প্রকাশের সময় :২৪ আগস্ট, ২০২১ ১০:০৫ : অপরাহ্ণ
Rajnitisangbad Facebook Page

২১ আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়ে তিনদিন পর ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যাওয়া নারী নেত্রী আইভি রহমানের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আজকের দিনে আমার আইভি চাচির কথাই বেশি মনে হচ্ছে। একটা অবাক কান্ড আপনারা হয়তো জানেন না, তাকে যখন সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়, আমরা ঠিক জানি না কখন কোন মুহূর্তে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তার (আইভি রহমান) ছেলে-মেয়েরা তার কাছে ছিল। সে সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তাকে দেখতে যাবেন বলে তার ছেলে-মেয়েরা যারা বেডের কাছে ছিল তাদের একটা কামরার মধ্যে নিয়ে তালা মেরে রাখে। প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা নাজমুল হাসান পাপন, বোন তানিয়া, ময়না এদের সবাইকে একটা রুমে তালা দিয়ে রেখে তার পর খালেদা জিয়া যান আইভি রহমানকে দেখতে। আর খালেদা জিয়া যখন দেখে ফিরে আসেন, এর পরই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এ কথাটা অনেকেরই জানা নেই, আমি এটা জানিয়ে রাখলাম যে, কত বড় নৃশংসতা এরা করতে পারে!’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলাবিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমান। তিন দিনের মাথায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছিল তার।’

আজ মঙ্গলবার আইভি রহমানের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকীতে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়াত নেত্রী আইভি রহমানকে স্মরণ করে এসব কথা বলেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু হত্যার চেষ্টাই না, হত্যার পর লাশ নিয়েও তারা যে কর্মকাণ্ড করেছিল, তা ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। মারা যাওয়ার পর অনেকের লাশ তারা দিতে চায়নি। লাশ আত্মীয়স্বজনের কাছে তারা দেয়নি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজে দলের সমর্থক এবং যারা জীবিত, তারা যেহেতু সাহায্য করতে যান এবং সারা রাত তাদের চেষ্টার পর একে একে সেই লাশগুলো হস্তান্তর করে। তারা লাশটা পর্যন্ত দিতে চায়নি। পারলে লাশটা গুম করে ফেলত-এই ছিল অবস্থা।’

হামলায় আহত ব্যক্তিদের দেশে–বিদেশে চিকৎসাসহ তাদের সুবিধা–অসুবিধায় পাশে দাঁড়িয়েছেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের অনেকেই আজ আর নেই, মারা গেছেন। অনেকেই পঙ্গু হয়ে দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘আহতদের আমরা বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্ট থেকে সহায়তা দিয়েছি এবং সে সময় একটা আলাদা অ্যাকাউন্ট খুলে যে ফান্ড এসেছে তা থেকে চিকিৎসাধীন প্রত্যেককে আর্থিক সহযোগিতা দিয়েছি এবং এখনও আমরা দিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে আহত যাদের চিকিৎসার প্রয়োজন তাদের সহায়তা দিচ্ছি। মাসোহারা দিচ্ছি, তাদের ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা, বিয়ে-শাদী যত রকমের সহযোগিতা দরকার আমি এখনও তা করে যাচ্ছি। যাদের খুব খারাপ অবস্থা ছিল আর্থিকভাবে তাদের সাহায্য এখনও অব্যাহত আছে।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের জন্য দেশবাসীর দোয়া কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আইভি চাচিসহ যারা মারা গেছেন তাদের সবার জন্য দোয়া চাই।’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি সমাবেশে এক ডজনেরও বেশি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয় এবং এই হামলায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও তার শ্রবণেন্দ্রীয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা এবং নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ দলের ২২ নেতা-কর্মী নিহত এবং অন্তত ৫শ নেতা-কর্মী, পথচারী ও সাংবাদিক আহত হন।

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর