রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৪ আগস্ট, ২০২১ ৮:০০ : অপরাহ্ণ
আফগানিস্তানের একমাত্র বিরোধী ঘাঁটি পাঞ্জশিরেরও দখল নিতে পারে ‘অপ্রতিরোধ্য’ তালেবান। পাঞ্জশিরের নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের নেতা আহমেদ মাসুদ আত্মসমর্পণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে তালেবান নেতৃত্বের সঙ্গে তার আলোচনা শুরু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ব্রিটেনের একটি সংবাদপত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা।
পাঞ্জশির উপত্যকায় আফগানিস্তানের তাজিক উপজাতিরা বসবাস করে।
খবরে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সহায়তা এবং অস্ত্রের অভাবে আন্তসমর্পণ করতে পারেন পাঞ্জশিরের তাজিক নেতা আহমেদ মাসুদ।
তার একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রের উদ্ধৃত করে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ইতিমধ্যেই তালেবান নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে মাসুদের। যদিও মাসুদ শিবিরের পক্ষ থেকে এখনও এই দাবির সত্যতা স্বীকার করা হয়নি।
মাসুদের পাশাপাশি পাঞ্জশির এবং আশপাশের অঞ্চলগুলিতে তালেবান বিরোধী প্রতিরোধের নেতৃত্বে রয়েছেন আফগানিস্তানের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লা সালেহ্। নিজেকে আফগানিস্তানের ‘ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে দাবি করা সালেহ্র ‘গতিবিধি’ নিয়ে কোনও খবর সামনে আসেনি।
গেল সোমবার তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ টুইট বার্তায় জানিয়েছিলেন, তালেবান যোদ্ধারা পাঞ্জশির ঘিরে ফেলেছে। শীঘ্রই ওই এলাকা তাদের হাতে আসবে।
এর আগে কাবুলের সুরক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত তালেবানের হক্কানি নেটওয়ার্কের নেতা খলিল হক্কানি বলেন, ‘আহমেদ মাসুদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আফগানিস্তানের শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মসমর্পণে সায় দিয়েছেন।’
৩২ বছরের আহমেদ মাসুদও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, রক্তপাত এড়াতে তালেবানের সঙ্গে তিনি আলোচনায় রাজি। যদিও এরই মধ্যে পাঞ্জশির, বাঘলান, পারওয়ানসহ কয়েকটি প্রদেশে তালেবান এবং নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের তীব্র লড়াইয়ের খবর সামনে এসেছিল।
মাসুদের বাবা দুর্ধর্ষ মুজাহিদিন কমান্ডার আহমদ শাহ মাসুদ প্রায় ২৫ বছর আগে তালেবান বিরোধী নর্দার্ন অ্যালায়্যান্স প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সে সময়ও পাঞ্জশিরের দখল নিতে পারেনি তালেবান। ২০০১-এ টুইট টাওয়ার হামলার দু’দিন আগে সাংবাদিকের ছদ্মবেশে আল কায়দার মানববোমা হামলায় তিনি নিহত হন। আহমেদের বাহিনী এবার উত্তর-মধ্য আফগানিস্তানে তালেবানকে শক্ত প্রতিরোধের মুখে ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল।
পাঞ্জশির উপত্যকায় এখনও মাসুদ অনুগত ৬ হাজার যোদ্ধা রয়েছে বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবর। এ ছাড়া কয়েক হাজার আফগান সেনা এবং উজবেক ‘যুদ্ধপতি’ রশিদ দোস্তমের অনুগত মিলিশিয়া যোদ্ধারাও রয়েছেন তালেবান প্রতিরোধের লড়াইয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মাসুদ অস্ত্র সমর্পণ করলে গোটা আফগানিস্তানেই তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হবে।
এর আগে গতকাল সোমবার তালেবান বাহিনী পাঞ্জশিরের পাশের প্রদেশের তিনটি জেলা আবার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিয়েছে। ফলে এখন আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের ৩৩টি তালেবানের হাতে।