বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ‘সরকার দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে।’
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনে হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘শুধু বরিশাল কেন? সারা দেশেই এরকম সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম হয়েছে। অধ্যাপক আসিফ নজরুলের অফিস কক্ষে কীভাবে তালা লাগিয়ে দিয়েছে ও কিভাবে তাকে থ্রেট করেছে। এটাকে কি কোনো সভ্য গণতান্ত্রিক দেশ বলবেন? এটা তো পাকিস্তানিদের থেকেও খারাপ।’
মির্জা ফখরুলের এই বক্তব্যের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বর্তমান সরকার কোনো সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেনি। বরং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় পরিপুষ্ট সন্ত্রাস ও দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির বিস্তার প্রতিরোধে কাজ করছে।’
তিনি বলেন, ‘দলীয় পরিচয়ের আড়ালে কোনো অপরাধী কোনোদিন প্রশ্রয় পায়নি, পাবেও না। বরিশালের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।’
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিসহ সার্বিক পরিস্থিতি পাকিস্তানের সঙ্গে তুলনা করেছেন। অথচ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আর্থসামাজিক সব ক্ষেত্রে দেশের অগ্রগতি অভূতপূর্ব, যা বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছে। বিশ্ব নেতরা ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে চলা বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহারের মাধ্যমে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসের সর্বগ্রাসী রূপ দেশবাসী দেখেছে। বিএনপি যতবারই রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে ততবারই তাদের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী। তাদের হাত ধরেই এ দেশের মাটিতে সন্ত্রাসের বিষবৃক্ষ মহীরুহে পরিণত হয়েছিল। যার সর্বশেষ সংস্করণ ছিল উগ্র-জঙ্গি মৌলবাদী সন্ত্রাস।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতির নীতিকে নির্বাসনে দিয়ে বিএনপি সন্ত্রাসের মাধ্যমে দেশের জনগণকে শাসন করতে চেয়েছিল। ১০ ট্রাক অস্ত্র এনে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের চারণভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিরোধী মতকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিক কাঠামোর সকল শিষ্টাচার লঙ্ঘন করে বিএনপি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘২০০৫ সালে ১৭ আগস্ট সারা দেশের পাঁচ শতাধিক স্থানে বোমা হামলা চালানো হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের হাত ধরে তখনকার সময়ে সন্ত্রাসের অভয়ারণ্যে পরিচিত বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে একটি শান্তি ও সম্প্রীতির জনপদে পরিণত হয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সর্বদাই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। দলীয় পরিচয়ের আড়ালে কোনো অপরাধী কোনো দিন প্রশ্রয় পায়নি আর পাবেও না। বরিশালের ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক, তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দিয়েছেন। অনেকেই গ্রেফতার হয়েছেন। অথচ বিএনপির আমলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের দুঃসহ স্মৃতি জাতি এখনও ভুলেনি।’