প্রতিনিধি, বরিশাল প্রকাশের সময় :১৯ আগস্ট, ২০২১ ৭:৩৩ : অপরাহ্ণ
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি বাসভবনে হামলার ঘটনায় শহরে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ, র্যাবের টহল জোরদারের পাশাপাশি ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার গণমাধ্যমকে জানান, ইউএনওর বাসভবনে হামলার পর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে শহরে ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি মোতায়েন করা হচ্ছে।
গতকাল বুধবার রাতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে পোস্টার অপসারণ নিয়ে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাসভবনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যদের সাথে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনার একপর্যায়ে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসের সাথে ইউএনও মুনিবুর রহমানের বাকবিতণ্ডা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরাও ইউএনওর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আনসার সদস্যদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় গুলি চালায় আনসার সদস্যরা। এতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাসসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন। এছাড়া আহত হন ৩০ জন।
এরই জের ধরে ইউএনওর বাসায় হামলা চালায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাদ সাদিক আবদুল্লাহর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে সেখানে তুমুল হট্টগোল তৈরি হয়।
পুলিশ এসে ইউএনওর কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে তাদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ নির্বিচারে সেখানে লাঠিচার্জ শুরু করে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধাওয়া পালটা ধাওয়া শেষে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
এ ঘটনায় ইউএনও ও পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে। দুটি মামলাতেই প্রধান আসামি করা হয়েছে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহকে। এছাড়া মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯৪ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, দুটি মামলায় আওয়ামী লীগ ও ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৯৪ জন নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে এ ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল চারটার দিকে নগরের কালীবাড়ি রোডের মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘটনাকে পরিকল্পিত দাবি করে বলেন, শোকের মাসে পরিকল্পিতভাবে একটি শহরকে অশান্ত করতে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। ইউএনওর বাসায় কেউ হামলা করেনি।
তারা এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেছে।