রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :১৯ আগস্ট, ২০২১ ১২:১৫ : অপরাহ্ণ
তালেবানের আক্রমণের ভয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া আফগানিস্তানের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি দাবি করেছেন, তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। দেশে থাকলে হয় তাকে তালেবান যোদ্ধারা পিটিয়ে মেরে ফেলতো, না হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট মহম্মদ নাজিবুল্লার মতো ল্যাম্পপোস্টে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিতো।
বুধবার (১৮ আগস্ট) রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) অজ্ঞাত স্থান থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এই দাবি করেছেন।
গত রোববার তালেবানের হাতে কাবুল ছেড়ে পালানোর পর গত তিন দিনে গনির খোঁজ পাওয়া যায়নি। শেষমেশ বুধবার জানা যায়, তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন। মানবিকতার খাতিরে সপরিবার গনিকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে জানায় আরব আমিরাত সরকার।
আশরাফ গনি বলেন, ‘আমি এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে আছি। দেশ ছেড়েছি বলে রক্তপাত ও সংঘাত বন্ধ হয়েছে।’
প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস ত্যাগ করার সময় হেলিকপ্টার বোঝাই করে টাকা নিয়ে গেছেন বলে গণমাধ্যমে যে খবর বেরিয়েছে, তা অস্বীকার করেন গনি।তিনি দাবি করেন, পালিয়ে যাওয়ার সময় তিনি ব্যক্তিগত জিনিসপত্রই সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি। এমনকি নিজের স্লিপারটি পরিবর্তন করে জুতা পায়ে দেওয়ার সুযোগই পাননি!
ফেসবুকে ৯ মিনিটের ভিডিও বার্তায় আশরাফ গনি বলেন, ‘ক্ষমতার লোভে কাবুলকে সিরিয়া বা ইয়েমেন হতে দেওয়া যাবে না। আমাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে। ওখানে থাকলে রক্তপাত ঘটতোই।’
তালেবানের পুনরুত্থানে যে অনিশ্চয়তা এবং আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তার জন্য নিজের সরকারের শীর্ষ আমলা, রাজনীতিক এবং আন্তর্জাতিক মহলকে কাঠগড়ায় তুলেছেন গনি।
তিনি বলেন, তালেবান কাবুলে ঢুকবে না, এমন চুক্তি সেরে রাখা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও রোববার বিকেলে নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে খবর দেন যে, প্রেসিডেন্ট ভবনের ফটক পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে তালেবান।
গনির কথায়, ‘এটা আফগান সেনার ব্যর্থতা নয়। আমার সরকারের প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং আন্তর্জাতিক মহলের ব্যর্থতা।’
সাবেক আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই ও আব্দুল্লাহ আব্দুল্লাহর সঙ্গে তালেবানের আলোচনায় বসার বিষয়টি সমর্থন করেন বলে জানিয়েছেন আশরাফ গনি।
তিনি বলেন, ‘নির্বাসনে থেকে যাওয়ার ইচ্ছা নেই। আফগানিস্তানে ফিরতে চাই, এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে।’
২০১৪ সালে আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন আশরাফ ঘানি। এর আগে দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন হামিদ কারজাই। দুজনই তাঁদের শাসনকালে আফগানিস্তানে অবস্থানরত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা বাহিনীর মিত্র হিসেবে কাজ করেছেন।
সূত্র: ডন