রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ | ১৪ আশ্বিন, ১৪৩১ | ২৫ রবিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আইন-আদালত

গোয়েন্দা কর্মকর্তার বাসায় ১৮ ঘণ্টা কাটিয়েছেন পরীমনি


রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :৬ আগস্ট, ২০২১ ১১:১৫ : অপরাহ্ণ
চিত্রনায়িকা পরীমনি ও পুলিশ কর্মকর্তা গোলাম সাকলায়েন।
Rajnitisangbad Facebook Page

১ আগস্ট সকাল ৮টা ১৫ মিনিট, পরীমনির সাদা রংয়ের একটি হ্যারিয়ার গাড়ি ( ঢাকা মেট্রো-ঘ ১৫ ৯৬ ৫৩) এসে থামে পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি আবাসিক ভবনের সামনে। প্রথমে সেই গাড়ি থেকে লাল রংয়ের টি-শার্ট পরিহিত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তা নামেন। এরপর সাদা রংয়ের একটি স্লিপিং গাউন পরিহিত অবস্থায় নামেন হালের আলোচিত নায়িকা পরীমনি।

পুলিশ কর্মকর্তাদের বাসভবনের নিচে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে বাসার চাবি নেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর তারা দুজন লিফটে করে ওই কর্মকর্তার বাসায় যান। এরপর পরীমনির গাড়ি থেকে একটি ট্রলি ব্যাগও ওই কর্মকর্তার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।

রাত দেড়টা, ওই ভবনের সামনে আবার আসে পরীমনির গাড়ি। চালক কর্মকর্তার পরিচয় দিয়ে সেখানে ঢোকেন। গাড়ি পার্কিং করে তিনি মোবাইলে উচ্চ শব্দ গান ছেড়ে শুনছিলেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তার বাসায় ১৮ ঘণ্টা কাটিয়েছেন পরীমনি

সেই সময় দায়িত্বরত এক নিরাপত্তা সদস্যের বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। কারণ, পুলিশের নিজস্ব কোন চালক এতো রাতে আবাসিক এলাকার মধ্যে এভাবে গান শোনার কথা না।

তিনি তখন পরীমনির ওই চালকের কাছে তার পরিচয় আবার জানতে চান। চালক তখন ওই নিরাপত্তা কর্মিকে বলেন, পরীমনির সাথে ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার বিয়ে হয়েছে বলে তিনি জানেন।

এই গাড়ি আদৌ পরীমনির কিনা তা সন্দেহ করলে, চালক ভাইরাল হওয়া বোট ক্লাবে ক্লাবের ভিডিও ফুটেজ নিরাপত্তা কর্মীদের দেখিয়ে বলেন যে তার গাড়ি ও সেই গাড়ি একই গাড়ি কিনা। তখন উপস্থিত নিরাপত্তা কর্মীরা বিষয়টি বিশ্বাস করে পরিস্থিতি দেখতে থাকে। সোয়া দুইটার দিকে পরীমনি তার প্রিয় কুটু এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও সাথে নিয়ে যাওয়া ট্রলি ব্যাগসহ বহুতল সেই ভবন থেকে নিচে নেমে আসেন।

সকালের সাদা পোশাকের পরিবর্তে এ সময় পরীমনির পড়নে ছিল কালো রংয়ের পোশাক আর পুলিশ কর্মকর্তার লাল টি শার্টের পরিবর্তে সাদা রংয়ের টি শার্ট।

পরীমনির গাড়িচালক মো. নাজির হোসেন ওই দিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জানান, ওই দিন সকাল ৭টার দিকে পরীমনির ফোন পেয়ে তিনি বনানীর বাসায় যান। সেই বাসা থেকে একসাথে গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও পরীমনি হ্যারিয়ার গাড়িতে ওঠেন।

এরপর তিনি তাদের ওই পুলিশ কর্মকর্তার সরকারি বাসভবনে নামিয়ে চলে যান। আবার রাতে ফোন পেয়ে সেই ভবনের সামনে যান। তখন তাকে নিরাপত্তা কর্মীরা নানা প্রশ্ন করেছিলেন।

এর আগেও পরীমনি ও ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তা মধ্যরাতে হাতিরঝিল এলাকায় গাড়িতে ঘুরেছেন বলে জানিয়েছেন পরীমনির গাড়িচালক নাজির হোসেন।

ওই গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাথে পরীমনির বিয়ে হয়েছে কিনা এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাজির বিষয়টি সঠিক জানেন না বলে জানান। তবে তিনি শুনেছেন যে, তারা বিয়ে করেছেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তার বাসায় ১৮ ঘণ্টা কাটিয়েছেন পরীমনি

গোয়েন্দা পুলিশের যে কর্মকর্তার সাথে পরীমনির এমন ঘনিষ্ঠতাটা সেই কর্মকর্তা পরীমনির দায়ের করা ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় মূল অভিযুক্ত নাসির ইউ মাহমুদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মাদক মামলার তদন্তের তত্ববধায়ক (সুপারভাইজার)। তাই বিষয়টি নিয়ে পুলিশ ও সরকারের গোয়েন্দা দপ্তরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান বলেন, কোনো মামলা সংশ্লিষ্ট নারীকে নিজ বাসায় নিয়ে যাওয়া পুলিশের কোনো ধরনের কোড অব কন্ডাক্টের মধ্যে পড়ে না। এটা খুবই অশোভনীয় ও অপেশাদার কর্মকাণ্ড। এটি কোন স্বাভাবিক ভব্যতার মধ্যে পড়ে না বলে মনে করেন সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক মোখলেসুর রহমান।

আলোচিত সেই গোয়েন্দা কর্মকর্তার নাম গোলাম সাকলাইন। তিনি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হিসেবে কর্মরত আছেন। আর সরকারি ফ্ল্যাট হলো রাজাবাগ অফিসার্স কলোনীর মধুমতি ভবনের ৯/সি।

এই বিষয়ে গোলাম সাকলাইনের বক্তব্যের জন্য শুক্রবার সারাদিনে তার মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কোন কর্মকর্তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে গোলাম সাকলাইন ছাড়াও আরও কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে পরীমনির ঘনিষ্ঠতা রয়েছে কিনা, সেই বিষয়ে তথ্য নিতে সরকারে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।

সূত্র: একাত্তর টিভি

মন্তব্য করুন
Rajnitisangbad Youtube


আরও খবর