নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :১ আগস্ট, ২০২১ ১২:০১ : অপরাহ্ণ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড নিয়ে তার মেয়ে ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা প্রশ্ন রেখে বলেছেন, ‘আমার অবাক লাগে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আমাদের দলের যারা ছিল, তারা কী করে জড়িত থাকলো?’
রোববার (১ আগস্ট) আসন্ন ‘জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্ত ও প্লাজমা দান কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাঙালিরা তাকে হত্যা করবে-এটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কখনোই বিশ্বাসই করতে পারেননি। তিনি ভেবেছিলেন পাকিস্তানীরা তাকে মারেনি, বাঙালিরা তাকে মারবে না-এই বিশ্বাসটা তার মধ্যে ছিল।’
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে কারা ছিলেন বর্ণনা দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বলেন, ‘ফারুক-রশিদ বিবিসিতে যে ইন্টারভিউ দিয়েছে সেখানে তারা বলেছে, জিয়াউর রহমান যে উপ-সামরিক প্রধান ছিল তার সঙ্গে তাদের যোগাযোগ ছিল যে সফল হতে পারলে তাদের সমর্থন দেবে, সঙ্গে থাকবে। মোশতাক-জিয়ার যে সখ্যতা ও তাদের যে সম্পর্ক এটা তো পরিষ্কার। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের যে আদর্শ, সেই আদর্শ থেকে বাংলাদেশ বিচ্যুত হয়ে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিচক্র বাংলাদেশের নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ পরিবর্তন করে ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ করতে চেয়েছিল। এ-সংক্রান্ত একটি খসড়াও তারা তৈরি করেছিল। যদিও এটা করতে পারেনি। মানুষ তা মেনে নেয়নি।’
বঙ্গবন্ধু হত্যার মামলার রায়ের দিনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিয়ার পথ ধরে জেনারেল এরশাদ এই খুনিদের রাজনীতি করার অধিকার দেয়। তাদের চেয়ে এক ধাপ এগিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে বিরোধী দলের নেতা বানান। ৯৬ সালে আমরা যখন প্রথমবার ক্ষমতায় আসি তখন এই বিচারের রায়ের দিন খালেদা জিয়া হরতাল ডেকেছিলেন। যাতে সেদিন কোর্ট না খুলে। বিচারক কোর্টে যেতে না পারে এবং এই মামলার রায় না দিতে পারে। সেজন্যই সেদিন বিএনপি হরতাল দিয়েছিল। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে সেদিন রায় হয়েছিল।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০১ এ খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে এই খুনিদেরকে আবার পৃষ্ঠপোষকতা করে। কাজেই দেশের ভেতরে এই ধরনের কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, ১৫ আগস্টে জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতা বিরোধীরাই কিন্তু ক্ষমতাটা দখল করে।’
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের বিচার সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হত্যার বিচার করেছি। কিন্তু এই ষড়যন্ত্রের পেছনে কারা সেটা এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে একদিন সেটা নিশ্চয়ই আবিস্কার হবে। আমার এই মুহুর্তে একটাই কাজ এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কে জড়িত, সেদিকে না গিয়ে আমার প্রথম কাজ হলো এ দেশের ক্ষুধার্ত, নীরিহ ও অসহায় মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা। আর সে লক্ষেই আমি কাজ করে যাচ্ছি।’
কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রমুখ।