নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৯ জুলাই, ২০২১ ১:১৫ : অপরাহ্ণ
ঈদুল আজহার আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছিলেন, ঈদের পর ১৪ দিনের জন্য সবচেয়ে কঠোর লকডাউন শুরু হবে। কিন্ত সেই লকডাউনের বাস্তবতার চিত্র ভিন্ন। ঈদের পর শুরু হওয়া লকডাউনে দুই-একদিন রাজধানীর প্রধান সড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও এর পর থেকেই পাল্টাতে থাকে দৃশ্যপট।
রাস্তায় যানবাহনের চাপ বেড়েছে। কোথাও কোথাও যানজট হচ্ছে। জীবন-জীবিকার তাগিদে বাইরে বেরিয়ে পড়ছেন শ্রমজীবী মানুষ। ভীড় বাড়ছে পাড়া-মহল্লার অলি-গলিতেও। ফলে কঠোর লকডাউন কার্যত পরিণত হয়েছে শিথিল লকডাউনে।
আজ বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) লকডাউনের সপ্তম দিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে শুধু যানবাহনের চাপই নয়, বরং যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
নগরীর লক্ষীবাজার, সদরঘাট মোড়, পুরানা পল্টন, শাহবাগ, কারন বাজার মোড়, রামপুরা রোড সহ বিভিন্ন ব্যস্ততম সড়কের ব্যক্তিগত যানবাহনের চাপ গত কয়েক দিনের তুলনায় বেশি দেখা গেছে। ব্যক্তিগত যানবাহনের পাশাপাশি সব সড়কে রিকশা এবং মোটরসাইকেলের দাপট রয়েছে।
চেকপোস্টগুলোতেও তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। গাড়ির কাগজপত্র ও উপযুক্ত কারণ দেখাতে ব্যর্থ হলে দেয়া হচ্ছে মামলা। ব্যাংকসহ জরুরি সেবাখাতে নিয়োজিত অনেক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকায় চাকরি বাঁচাতে কর্মস্থলে ছুটছেন অনেকেই। কিন্তু, অনেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব গাড়ির ব্যবস্থা না থাকায় তারা পড়েছেন ভোগান্তিতে। হেঁটে কিংবা রিকশায় অফিসে যাচ্ছেন তারা।
সকালে গাবতলী এলাকায় পুলিশের চেকপোস্টে যানবাহনের চাপে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এই চেকপোস্টে পণ্যবাহী যানবাহনের পাশাপাশি ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ অনেক বেশি বলে পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।
যানবাহনের পাশাপাশি পায়ে হেঁটেও অগণিত মানুষ আমিনবাজার ব্রিজ পার হয়ে ঢাকায় ঢুকছে। ফার্মগেট থেকে মহাখালি হয়ে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত সড়কে আজ ব্যক্তিগত গাড়ি অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি চলাচল করছে। বনানী সিগনালে সকাল থেকেই থেমে থেমে যানজট হয়েছে।
অফিস খোলা থাকায় রাজধানীর সব সড়কে বিগত দিনগুলোর মতই অফিসগামী মানুষের ব্যস্ততা চোখে পড়ে। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ব্যস্ততম মতিঝিল, দিলকুশা ও ফকিরাপুল এলাকার প্রতিটি সড়কে মানুষ এবং যানবাহনের বেশ ভিড় রয়েছে। এসব এলাকার ব্যক্তি মালিকাধীন প্রায় সব অফিসে এখন স্বাভাবিক সময়ের মতো কর্মীদের উপস্থিতি রয়েছে। কাজের ব্যস্ততাও রয়েছে।
অফিস ছাড়াও বিভিন্ন জরুরী কাজে অসংখ্য মানুষ আজ রাস্তায় নেমেছে। সড়কগুলোতে পুলিশ চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করলেও যানবাহনের চাপের কারণে সব যানবাহন থামিয়ে লোকজনকে বাইরে বের হওয়ার কারণ জানতে পারছে না। রাজধানীর মিরপুর ১০, ১ নম্বর সেকশন, বিজয় স্মরণী মোড় সহ সব সড়কেই রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ অনেক বেড়েছে।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত কঠোর লকডাউন আরোপ করে সরকার। পরে লকডাউনের মেয়াদ ১৪ জুলাই পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। এরপর কোরবানির ঈদ এবং জীবন জীবিকার প্রশ্নে ১৫ জুলাই থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত ৮ দিনের জন্য লকডাউন শিথিল করে সরকার। এরপর ২৩ তারিখ থেকে আবার শুরু হয় কঠোর লকডাউন। যা চলবে ৫ আগস্ট মধ্যরাত পর্যন্ত।