রাজনীতি সংবাদ ডেস্ক প্রকাশের সময় :২৫ জুলাই, ২০২১ ৯:৪০ : অপরাহ্ণ
সকালে বাজার করতে এসেছিলেন একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি)। তখনই তাকে এক পেয়ারা বিক্রেতা বলে ওঠেন, ‘দাদা, আমার ভ্যানটি একটু দেখবেন। আমি খেয়ে আসি।’
আবেদনে সাড়া দেন তন্ময় সরকার নামের ওই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। তিনি ভ্যানের দিকে শুধু নজরই রাখেননি, বিক্রিও শুরু করেন। ক্রেতারা যাতে ফিরে না যান, তাই নিজের হাতে তুলে নিয়েছেন দাঁড়িপাল্লা। ফল কিনতে আসা ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন পেয়ারা। বিক্রেতা ফিরে এলে তাকে হিসেব বুঝিয়ে দিয়ে চলে যান তন্ময়।
ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মুর্শিদাবাদের বহরমপুর শহরে।
নিজের পরিচয় কাউকে দেননি তিনি। কিন্তু যুগটা সোশ্যাল মিডিয়ার। আর এখানে পরিচয় গোপন রাখা যথেষ্ট কষ্টকর। এরইমধ্যে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী এএসপি তন্ময় সরকারকে চিনতে পেরে গোটা ঘটনাটি পোস্ট করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বেশ কিছু ছবিতে দেখা যায়, দাঁড়িপাল্লা দিয়ে পেয়ারা বিক্রি করছেন এএসপি তন্ময় সরকার। তাকে প্রায় ২০ মিনিট এভাবে দাঁড়িপাল্লায় মেপে পেয়ারা বিক্রি করতে দেখা গেছে।
ওই ফেসবুক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘যাকে ছবিতে পেয়ারা বিক্রি করতে দেখছেন, তিনি পেয়ারা বিক্রেতা নন, তিনি লালবাগের এএসপি। আজ সকালে বহরমপুরে শখের বশে বাজার করতে গিয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ পেয়ারা বিক্রেতা বলে ওঠেন, দাদা একটু দেখবেন আমার ভ্যানটি, আমি টিফিন করে আসি। এএসপি তন্ময় সরকার পেয়ারা বিক্রেতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।’
এএসপি তন্ময় সরকার অবশ্য এতোটা ভাবতে পারেননি। ঘটনা জানার পর তিনি বলেন, মাঝেমধ্যেই এভাবে পরিচয় গোপন করে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ান তিনি। যাতে মানুষের মন বুঝতে পারেন এবং বুঝতে পারেন শহরের বর্তমান অবস্থা। কিন্তু খবরটা যে এভাবে ভাইরাল হবে তা আদৌ বুঝতে পারেননি এএসপি।
আর সেই বিক্রেতা কী বলছেন? গোটা ঘটনা শুনে তিনি তো রীতিমতো অবাক।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিদিন এই এলাকায় পেয়ারা বিক্রি করি। শনিবার সকালেও দোকান খুলে বসেছিলেন। আমি না চিনেই ওঁকে পেয়ারার ভ্যানটি দেখতে বলি। আমি তখন জানতাম না, উনি এতবড় একজন পুলিশ অফিসার। উনি যে নিঃশব্দে আমার দাবি মেনে নেবেন, ভাবতেই পারিনি। তবে আমি খুশি, উনি এভাবে আমার ভ্যান থেকে পেয়ারা বিক্রি করায়।’