শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৬

মূলপাতা আওয়ামী লীগ

‘চাকরিজীবী লীগ’ করে আ.লীগের পদ হারালেন হেলেনা জাহাঙ্গীর



নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশের সময় :২৪ জুলাই, ২০২১ ৯:৩০ : অপরাহ্ণ

‘চাকরিজীবী লীগ’ করার কারণে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য পদ হারালেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। শনিবার (২৪ জুলাই) আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সম্প্রতি ফেসবুকে ‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামের একটি সংগঠনের সভাপতি হিসেবে জয়যাত্রা গ্রুপের কর্ণধার ও এফবিসিসিআইর পরিচালক হেলেনা জাহাঙ্গীরের নাম আসে। সেই কারণেই তাকে উপকমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক।

মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, ‘উনি তো কুমিল্লা আওয়ামী লীগের সদস্য। আওয়ামী পরিবারের হিসেবেই আমি জানি। ওনার জয়যাত্রা টেলিভিশন নামে একটা মিডিয়া আছে, যেটার সঙ্গে আমাদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী মহোদয় আছেন। এই সুবাদেই উপকমিটিতে ওনাকে আমরা রেখেছি।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু উনি কী করছেন…আমাদের না জানিয়ে করছেন। আমি ইতোমধ্যে আমাদের দপ্তরে জানিয়েছি, তাকে চিঠি দিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের উপকমিটিতে যেহেতু তিনি নিয়মনীতি ভঙ্গ করেছেন, তিনি কী করছেন, আমাদের জানাননি, তার সদস্যপদ আমরা বাতিল করে দিয়েছি।’

‘বাংলাদেশ আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের পোস্টার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টারে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হেলেনা জাহাঙ্গীর আর সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মনিরের নাম উল্লেখ করা হয়। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক হিসেবে সাইফুল ইসলাম ইমনের ফোন নম্বর দিয়ে পদ প্রত্যাশীদের যোগাযোগ করতে বলা হয়। ওই পোস্টারে সংগঠনটির জেলা, উপজেলা ও বিদেশি শাখায় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ দেওয়া হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।

‘চাকরিজীবী লীগ’ নামে সংগঠনটির পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, তারা দুই-তিন বছর ধরেই আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন হিসেবে অনুমোদন পাওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংগঠনটির সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো সম্পর্ক নেই।

এ বিষয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীর শনিবার বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমাকে উপকমিটি থেকে বাদ দেয়ার কোনো চিঠি আমি পাইনি। দলীয়ভাবে কেউ কিছু বলেওনি। আর আমি তো কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা।’

চাকরিজীবী লীগে সম্পৃক্ততা অস্বীকার না করে তিনি বলেন, ‘আমি চাকরিজীবী লীগের সাথে সরাসরি যুক্ত ছিলাম না। আমাকে এই কমিটিতে সভাপতি করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তাই অনেকেই ফেসবুকে দিয়েছে। যেহেতু আমাকে সভাপতি বানানোর কথা ছিল, সেই হিসেবে কেউ হয়তোবা দিয়েছেন।’

খালেদা জিয়ার সঙ্গে হেলেনার ছবি ভাইরাল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের একটা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে হেলেনার ছবি ভাইরাল

এ নিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন হেলেনা জাহাঙ্গীর। পাঠকদের জন্য তা হুবহু তুলে ধরা হলো-

‘ব্যবহার বংশের পরিচয়….
আমাদের দেশের কিছু মানুষ রাজনীতি করে নিজের দেমাগ ফুটিয়ে তুলতে।নিজের দলের সাথে নিজের কমিটির মেম্বারদের সাথে নিজেরাই পেছনে লেগে থাকে।কি অসভ্যতা আল্লাহ মাফ করুন।ছিঃছিঃ কি জঘন্য মানসিকতা।আমরা এগুলো দেখে বড় হই নাই। ঘাত-প্রতিঘাত পার করে আজকের এই অবস্থান। পেছনে যারা করে তারা কখনো উঠতে পারে না। রাজনীতি করলে মনে করে সে নিজেই রাজা তার ওপরে যে কত রাজা আছে সেটাই ভুলে যায়। কিছু কথা না বলেই নয়। সাবেক চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে কি আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ছবি নেই? তাতে কি কিছু বুঝা যায়? আমারা কি অশিক্ষিত যারা এই ভুলগুলো করছি। সবাইকে জানানোর জন্যেই বলছি, আমি আমার নেতা ও নেত্রীর কথার বাইরে এক পাও আগাইনা কাজও করি না। ওনাদের পরামর্শ নিয়েই সব কাজ করি। যারা আমাকে নিয়ে লিখেছেন তারা আমাদের আওয়ামী লীগের। আমার বোধগম্য হয় না কিভাবে তারা ঘরের মানুষের ঘরের মানুষ লেগে থাকে। যাইহোক আল্লাহ হেদায়েত করুন।আবারও বলছি এর আগেও বলেছি খালেদা জিয়া ও অনান্যদের সাথে যে ছবিগুলো ভাইরাল হচ্ছে সেটা বিয়েতে এসেছিল তখন তোলা ছবি এবং এ ছবিগুলো আমি নিজেই ফেসবুকে দিয়েছিলাম।আমার কিছুই গোপনীয়তা নেই।আর আমি একজন প্রকৃত ১০০% ব্যবসায়ী ও সরকারের একজন কমার্সিয়াল ইমপোর্টেন্ট পার্সন CIP…সেখান থেকে রাজনীতিতে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ছোট বেলা থেকেই। যারা পেছনে কথা বলে তারা আমার কাছে আসতে পারে না বলেই এভাবে লেগে থাকে। আমার চেয়ার আমাকে কেউ দেয় নাই। আমার যোগ্যতায় ও আমার কঠোর পরিশ্রমের ফসল আমার এখানে আসা। পেছনে যারা কথা বলে তাদের কোনো অস্তিত্ব নেই বলেই বলে। যাদের যোগ্যতা নেই, তারাই মানুষের পেছনে লেগে থাকে, মানুষ সামাজিক জীব সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই আমাদেরকে বিভিন্ন আচার অনুষ্ঠানে যেতে হয়, একটা ছবি মানুষের রাজনৈতিক পরিচয় বহন করে না।’

মন্তব্য করুন
Rajniti Sangbad


আরও খবর